বীরগঞ্জ, দিনাজপুর থেকে বিকাশ ঘোষ ॥ প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও দিনাজপুরের
বীরগঞ্জ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নের ১৮৭টি গ্রামের প্রতি
গৃহে প্রায় ২০ হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা অনুষ্ঠিত
হয়েছে। কোজাগরী পূর্ণিমায় লক্ষ্মীর আরাধনায় সেজে উঠে বাঙালি হিন্দুদের
গৃহকোণ। মঙ্গলঘট, ধানের ছড়ার সঙ্গে গৃহস্থের আঙিনায় শোভা পায় চালের
গুঁড়ো, আলপনায় লক্ষ্মীর ছাপ। অনেকে বলে লক্ষ্মী মানে শ্রী,সরুচি। লক্ষ্মী পূজা
করতে আসা তপন চক্রবর্তী জানান, লক্ষ্মী সম্পদ যুগে মহাশক্তি হিসেবে তাকে
পূজা করা হতো। তবে পরবর্তীকালে ধনশক্তির মূর্তি নারায়ণ সঙ্গে তাকে জুড়ে
দেওয়া হয়। শারদীয় দুর্গোৎসব শেষে প্রথম পূর্ণিমা তিথিতে সনাতন
ধর্মালবম্বীরা এ পূজা করে থাকে। এ উপলক্ষে হিন্দু রমণীরা উপবাসব্রত পালন করেন।
সন্ধ্যায় ঘরে ঘরে প্রজ্বলন করা হয় প্রদীপ। হিন্দুশাস্ত্র মতে, কোজাগরী পূর্ণিমা
রাতে দেবী লক্ষ্মী ধনধান্যে ভরিয়ে দিতে ভক্ত গৃহে পূজা নিতে আসেন।
প্রাচীনকাল থেকেই হিন্দু রাজা- মহারাজা, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ
গৃহেস্থ অব্দি সবাই দেবীকে পূজা দিয়ে আসছেন। বাঙালি হিন্দু বিশ্বাসে
লক্ষ্মীদেবী দ্বিভুজা। আর তার বাহন পেঁচা। তবে বাংলার বাইরে লক্ষ্মীর চতুর্ভুজা
কমলে- কামিনী মূর্তিই বেশি দেখা যায়। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুযায়ী বুধবার
সন্ধ্যায় দেবীর পূজার দেওয়ার নির্ঘণ্ট রয়েছে। এ সময়ের মধ্যেই পূজা সম্পন্ন করবে
হিন্দু নর- নারীগণ। সারাদেশের ন্যায়ে বীরগঞ্জে অনেক মন্দিরে ঘরোয়া পরিবেশে
লক্ষ্মীপূজার নানা ধর্মীয় কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যেও
ব্যস্ত সময় পার করছেন পরহিতরা। কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে বীরগঞ্জ পৌরশহরের
দৈনিক বাজারে বৌদ্ধ সাহার দোকানে প্রতিমা ও পূজার বিভিন্ন সমগ্রী
কিনার হিড়িক ছিল চোখে পড়ার মতো। এব্যাপারে দোকানী বৌদ্ধ সাহা
জানান,এ বছর বৃষ্টির কারণে লক্ষ্মী পূজার সামগ্রী বিক্রয় কম। লক্ষ্মীপূজা
উপলক্ষে বীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কবিরগান, মারাহুরার গান সহ চলে
নানা আয়োজন।