বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী রাষ্ট্রভাষা বাংলা দাবিতে পাকিস্তানি শাসকের বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে যাঁরা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, যাঁদের আত্মত্যাগে বাঙালি পেয়েছিল ভাষার অধিকার, ফুল আর শ্রদ্ধায় তাঁদের স্মরণে করেছে জাতি। বিনম্র শ্রদ্ধা, যথাযথ মর্যাদা ও পূর্ণ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন‘মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২২’ পালন করেছে।
অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে উপজেলা পরিষদ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল ইসলাম পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান ভাষা আন্দোলনের বীর শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদরন করেন। রাত ১২টা ১টি মিনিটে প্রথমে উপজেলা প্রশাসক এবং এর পরপরই উপজেলা পরিষদ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় অমর একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি… বাজানো হয়।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে শহিদদের প্রতি সন্মান প্রদর্শণ করেন এবং সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা আন্দোলনের শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর পর মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার বিকেলে বীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে উপজেলা প্রশাসন অনুষ্ঠান পালনের আয়োজনে আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল ইসলাম বক্তব্যে বলেন, ২১ এর চেতনা বিনষ্ট করতে স্বাধীনতা বিরোধীরা সক্রিয় রয়েছে, এই চেতনাকে ধারণ ও লালন করতে হলে আগামী প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ কামাল হোসেন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কালিপদ রায়, এসএমএ খালেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুর ইসলাম নুর, বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সুব্রত কুমার রায়। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা আকতার বৃষ্টি সহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক শিক্ষার্থী, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনৈতিক ও স্থানীয় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। পরে কবিতা, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয় এবং ভিডিও প্রদর্শন, গণসঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোঃ হুমায়ুন কবির।