বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধিঃ প্রকৃতিতে বসন্ত আগমনের কয়েকদিন হলো। মাঘের শীত শেষে ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে উষ্ণতা। তাপমাত্রার সাথে সাথে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় আমের গাছে গাছে পাল্লা দিয়ে থোকায় থোকায় আমের মুকুলের সমারোহ। এবছর বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমের ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে চাষি ও উপজেলা কৃষি অফিস। গাছে গাছে থোকায় থোকায় মুকুলের সমারোহ। বাতাসে আমের মুকুলের মৌ মৌ ঘ্রান। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই আমগাগুলো মুকুলে সজ্জিত। ছোট-বড় সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন লালচে ও সোনালী বরণ মুকুল। পাশাপাশি জৈষ্ঠ্যমাস মানে মধু মাস। মধু মাসের আগমনী বার্তা দিচ্ছে আমের মুকুল। ফুটন্ত মুকুলের মৌ -মৌ গন্ধে সুবাসিত বীরগঞ্জ পৌরসভা সহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের চারপাশে। মৌমাছি সহ নানা পতঙ্গ ও মানুষকে ও বিমোহিত করে তুলেছে সেই সুবাস। গত বছরের তুলনায় এবছর দ্বিগুণ মুকুল হওয়ায় ভালো ফলের আশায় বুক বেঁধেছেন আম চাষি ও বাগানের মালিকরা। তাই প্রয়োজনীয় পরিচর্যার প্রস্তুতিও নিয়েছেন তারা। উপজেলা কৃষি অফিসার ও মাঠ কর্মীদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে তাঁদের পাশে দাড়িয়েছে। পৌরসভার পাড়া-মহল্লায় সহ উপজেলার শিবরামপুর, পলাশবাড়ী, শতগ্রাম,পাল্টাপুর,সুজালপুর, নিজপাড়া, মোহম্মদপুর, ভোগনগর, সাতোর, মোহনপুর ও মরিচাসহ ১১টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে দেখা যায়,আমের মুকুল পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন আম চাষিরা। গাছে গাছে সার এবং কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াও মুকুল ধরে রাখতে সময়মত গাছের গোড়াই পানি দেওয়া ও পরিচর্যা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাগান মালিক বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু সামা মিঞা ঠান্ড জানান,আমার ৬ একর জমিতে আম গাছের ইতিমধ্যে পরিচর্যার কাজ চলছে। গত বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি আমের মুকুল ধরেছে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে রয়েছে। একারণে আমের ভালো ফলের আশা করছেন। তিনি আরও বলেন, বড় ধরনের ঝড়- বৃষ্টি না হলে ইনশাআল্লাহ এবার আমের ফলন ভালো হবে। পৌরভার ৯নং ওয়ার্ড জগদল এলাকার আম চাষি আবুল কামাল আজাদ বলেন,তার বাগানে ৪শত বিভিন্ন উন্নত জাতের সুস্বাদু আম রয়েছে। বিশেষ করে এ অঞ্চলে বেশি ফলনশীল ল্যাংড়া, আম রুপালী আমের চাষ বেশি। পাশাপাশি ভিন্ন জাতেরও পরীক্ষামূলক চাষ করছেন। তার মধ্যে মিশ্রভোগ, গোপালভোগ, দুধ আম, গোলাপজাম,সূর্যপুরি,ফজলি আমসহ উৎপাদন করা হচ্ছে। গত বছর করোনার কারণে অর্থিক ভাবে ক্ষতি হলেও এবার আমের মুকুল ভালো এবং করোনার প্রভাব কম থাকায় আশা করছি ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। আমগাছের মুকুল ধরার আগেই দেশের বিভিন্ন এলাকার আম ব্যবসায়ীরা বীরগঞ্জ উপজেলায় আসেন। বাগান দেখে বড় বড় ব্যবসায়ীরা আমচাষী ও বাগান মালিকদের অগ্রিম টাকা প্রদান করে থাকেন। অনেকে বলছেন অনুকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করেছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু রেজা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান,গাছে গাছে যেভাবে মুকুল দেখা গেছে তাতে আবহাওয়ার পরিবর্তন না ঘটলে এবারে এ উপজেলায় আমের ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি। পাশাপাশি আমরা চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করে আসি।