তেঁতুলিয়া প্রতিনিধি :
তেঁতুলিয়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ১০/১২ জন। গত বুধবার সন্ধ্যায় তিরনইহাট ইউনিয়নের দগরবাড়ি এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। এক পক্ষের আহত ব্যক্তিরা হলেন আইয়ুব আলী (৬০), জসিম (৩০), সুমন খান (৩৫) ও ইব্রাহিম (৩৫)সহ কয়েকজন। এদের মধ্যে আইয়ুব আলী ও জসিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে জানা গেছে। আর সুমন ও মহসীন আলীঁ ও তার স্ত্রী, ইব্রাহিমসহ কয়েকজন পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে প্রতিপক্ষের ৪ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন-আব্দুল হালিম (৫৫), মসলিম (৩৫) নুর ইসলাম (৩৯) ও আব্দুল সাত্তার (৩৫) । তারা পঞ্চগড়ে হাসপাতালে চিকিৎসারত রয়েছেন বলে জানা গেছে। আব্দুল হালিম তিরনইহাট ইউনিয়নের ফুটকীবাড়ির জুরান আলীর পুত্র, মুসলিম দগরবাড়ির এন্তাজ আলীর পুত্র, নুর ইসলাম ফুটকীবাড়ি এলাকার মৃত.কুদ্দুস আলীর পুত্র ও আব্দুল সাত্তার ফুটকীবাড়ির জুরান আলীর পুত্র।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের মাসুদ রানা ফরহাদ বাদী হয়ে প্রতিপক্ষ আব্দুল হালিমকে প্রধান অভিযুক্ত করে ২৮জনকে আসামী করে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় এজাহার দাখিল করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই আইয়ুব আলী ও সুমন খানদের সাথে প্রতিপক্ষ হালিম গংদের সাথে জমাজমি বিরোধ চলছে। উভয় পক্ষই জমির মালিকানা দাবি করে চলমান রয়েছে মামলা-মোকদ্দমা। বিষয়টি মীমাংসার লক্ষে থানায় একাধিক বসার কথা জানা যায়। এরই জের ধরে বুধবার সন্ধ্যায় তিরনইহাট ইউনিয়নের দগরবাড়ি এলাকায় সুমন খানকে একা পেয়ে হামলা করে প্রতিপক্ষ আব্দুল হালিম ও তার সহযোগিরা। এক পর্যায়ে মারধর করে তাকে রাস্তায় ফেলে রাখে। পরে তাকে বাঁচানোর জন্য পরিবারের লোকজন ছুটে আসলে তাদের উপরও মারধর করা হয়।
বুধবার রাতে হাসপাতাল চত্বরে ভুক্তভোগী পরিবারের রাসেল জানান, দগরবাড়ির চার রাস্তার মোড়ে দোকানে সুমন খান পান খেতে যাওয়ার সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালান আব্দুল হালিমসহ সঙ্গপাঙ্গরা। লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে সুমনকে রাস্তায় ফেলে রাখে। খবর পেয়ে সুমনের চাচা আইয়ুব খান, আলী খান, ফালু খাঁন ও তার চাচাতো ভাই জসিম তাকে উদ্ধার করতে আসলে তাদের উপর হামলা চালান তারা। কারও মাথায়, কারও পা ও কারও হাত ভাঙ্গা অবস্থায় তাদেরকে দ্রæত উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করেন জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা।
কিন্তু প্রায় একই অভিযোগ প্রতিপক্ষ হালিম গংদের। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মুঠোফোনে আব্দুল হালিমের সাথে কথা হলে তিনি হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন তারাই তো আমাদের উপর হামলা চালায়। তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওঁত পেতে ছিল। আমরা ওই সময় ছিলাম ৪ জন। সবাই গুরুতর আহত হয়েছি। এখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। বিশেষ করে আমরা ২৯ একর জমির মালিক। তার মধ্যে ১৫ একর দখলে রয়েছে, বাকি তাদের দখলে। এটা নিয়েই ২০১৭ সাল থেকে জমাজমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। মামলা চলছে। ভূমি অফিসের তহশীলদার আমাদের পক্ষে রিপোর্ট দিয়েছে। কোন অভিযোগ বা মামলা করেছেন কীনা জানতে চাইলে তিনি জানান, না আমরা সবাই হাসপাতালে ভর্তি। মামলা করবো কিভাবে।
মডেল থানার ওসি আবু ছায়েম মিয়া জানান, আমরা এক পক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মামলা প্রক্রিয়াধীন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।