ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃদিনাজপুরের প্রায় একশ কি.মি. দুরে ঘোড়াঘাটের
আবিরের পাড়া মাহালিপাড়া, কলেজপাড়া, কামারপাড়ারসহ ৫টি গ্রামে ৩ শতাধিক পরিবার বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরী করা নানা সামগ্রী বিক্রি ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবারহ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাদের সংসারে ছিল না অভাব অনটন, সুখে-শান্তিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাস করতেন। কিন্তুু বর্তমান সময়ে কাজের অভাবে পরিবাররের সদস্যদের নিয়ে কষ্টে জীবন যাপন করছেন করিগররা।
ঘোড়াঘাটের গ্রাম-গঞ্জে এক সময় বাঁশ ও বেতের তৈরী টেবিল, চেয়ার, দোলনা ও বই রাখার সেল্ফসহ নানা ধরনের সাংসারিক নিত্য প্রয়োজনীয় বাহারি পণ্য ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে প্লাষ্টিক ও এ্যালুমিনিয়াম সামগ্রীর দাপটে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেতের তৈরী পণ্যর। কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিভিন্ন রূপে প্লাষ্টিক সামগ্রী বাজারে আসার কারনে এ শিল্পটি ধ্বংসের কারন বলে মনে করেন এ শিল্পে জড়িত কারিগররাসহ।
ঘোড়াঘাট উপজেলার আবিরের পাড়ার বাঁশ দিয়ে চালন ও ডালা তৈরীর কারিগর নিরলা মুরমু ও মারকুস মার্ডী বলেন, পূর্ব পুরুষদের পেশা ধরে রাখতে দীর্ঘদিন যাবত এ পেশায় রয়েছি। বর্তমানে বাঁশ ও বেতের সংকট ও চড়া মূল্য হওয়ায় তৈরী পণ্যের মূল্য পাওয়া যায়না।
এছাড়াও তারা আরোও বলেন, বর্ষাকালে নির্দিষ্ট জায়গার অভাবে আমাদের অনেক কষ্টে কাজ করতে হয়। যদি সরকারিভাবে আমাদের কে একটি শেড নির্মাণ করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা অনেক উপকৃত হব।
আবিরের পাড়া কুঠির শিল্প সমবায় সমিতির সভাপতি দোলনা তৈরীর কারিগর দুলাল মার্ডী বলেন, সব জিনিসপত্র প্লাষ্টিক এ্যালুমিনিয়ামের তৈরী হওয়ার কারনে এখন আর মানুষ আগের মত ব্যবহার করে না। তার দাবী সরকারি ভাবে অর্থনৈতিক সহযোগীতা পেলে হয়তো ফিরে পেতে পারে গ্রাম-গঞ্জের এই চিরচেনা শিল্পটি।
উপজেলার সমবায় অফিসার প্রদীপ কুমার জানান, ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে বাঁশ ও বেত শিল্পের কারিগরদের সরকারি বা বেসরকারিভাবে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা এবং সুদমুক্ত ঋণ দেয়া হলে এ শিল্পের প্রসার ঘটবে।