পঞ্চগড় প্রতিনিধি\ পঞ্চগড়ে প্রেমিকের বিরুদ্ধে মারধর, শ্লীলতাহানী এবং ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করে বিপাকে পড়েছেন এক ভুক্তভোগি তরুণী। থানায় মামলা দায়েরের পর আসামীরা ভুক্তভোগির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন বলেও অভিযোগ ওই ভুক্তভোগির পরিবারের। আসামীদেরকে গ্রেপ্তারে পুলিশের গড়িমসির কথাও জানান তারা। ঘটনাটি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের কালীগঞ্জ এলাকার।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, দন্ডপাল ইউনিয়নের ঢাকাইয়াপাড়া গ্রামের ইমরুল কায়েসের ছেলে নয়ন ইসলাম (২০) ওই ভুক্তভোগির সঙ্গে বিয়ের আশ্বাসে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্র ধরে নয়ন গত ২০ মে ভুক্তভোগির বাড়িতে গিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এতে ভুক্তভোগি চিৎকার শুরু করলে অভিযুক্ত নয়ন পালিয়ে যায়। পরে একই দিন বিকেলে নয়নের বাড়িতে গিয়ে ওই ভুক্তভোগি ঘটনা খুলে বললে নয়নের পরিবারের লোকজন তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
ভুক্তভোগি ওই তরুণী জানান, দুইজন একই কলেজে পড়ালেখার সুবাদে তাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত দেখা সাক্ষাত হত। এক পর্যায়ে নয়ন প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকে ভুক্তভোগিকে। প্রেম প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে বিয়ে করার আশ্বাস দেয় নয়ন। এতে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সূত্র ধরেই নয়নের সঙ্গে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতেও গিয়েছিলো বলে জানান ওই ভুক্তভোগি। ওই ভুক্তভোগি বলেন, আমি নয়নের বাবা-মাকে আমাদের সম্পর্কের কথা বলতে গিয়েছিলাম। তারা কোন কথা না শুনেই আমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ ঘটনায় আমি গত ১ জুন নয়ন ইসলামকে প্রধান আসামী করে ছয় জনের বিরুদ্ধে দেবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছি।
ভুক্তভোগী ওই তরুণীর মা বলেন, মামলা করার পর থেকেই নয়নের পরিবারের লোকজন আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। আমাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগও করেছে তারা। এদিকে মামলা করার কতদিন হয়ে গেলো, আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, অথচ পুলিশ কাউকেই আটক করছেনা। তাহলে কি আমরা ন্যায় বিচার পাবো না?
এদিকে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত নয়নের পরিবার। মুঠোফোনে তার বাবা ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, আমার ছেলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক। মামলায় দেখানো ঘটনার তারিখে আমার ছেলে এলাকাতেই ছিল না। তাছাড়া আমার ছেলে ওই মেয়ের চেয়ে ৪ বছরের ছোট। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হতেই পারে না। আর ওই তরুণীকে কোন মারধর করা হয়নি বলেও জানান তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দেবীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম বলেন, আসামীরা পলাতক থাকায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।