খানসামা (দিনাজপুর) থেকে মোঃ নুরনবী ইসলামঃ নীতিমালা উপেক্ষা করে বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে না জানিয়ে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের সরহদ্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ কতিপয় স্বার্থনেষী ব্যক্তিবর্গের যোগসাজশে গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে মনগড়া ম্যানেজিং কমিটির তালিকা তৈরি করে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের চেষ্টা করতেছে। বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা নিয়ম অনুযায়ী স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে ১৫অভিভাবকের স্বাক্ষরিত দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর কাছে শ্রেণি কক্ষে কমিটি গঠনে নোটিশ করা হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে তারা বলেন, এর আগে স্যাররা আমাদের কমিটি গঠনের কোন নোটিশ করে নি। তবে বুধবার উপজেলা থেকে এক স্যার আসবে শুনে স্কুলের স্যাররা ক্লাশে এসে কমিটি গঠনের বিষয়ে নোটিশ করেছিল।
অভিভাবক মনোয়ারা বেগম বলেন,আমার মেয়ে নাছরিন আক্তার ঐ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়ে। আমি প্রতিষ্ঠানের সামনে নিজ বাড়িতে মুদিখানার দোকান করি। আমি তো এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছু জানতে পারিনি।
আরেক অভিভাবক বৌদ্ধ রায় বলেন, আমার মেয়ে সম্পা রানী রায় ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। সে নিয়মিত স্কুলে যায়। কোনদিন জানতে পারিনি যে স্কুলে ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন হবে। তবে মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিনে স্কুলের এক শিক্ষকের কাছে জানতে পেরে তড়িঘড়ি করে মনোনয়ন পত্র কিনে তা পূরন করে জমা দেই। প্রধান শিক্ষক নিজের মত কমিটি গঠনের জন্য চুপি চুপি কমিটির এসব কাজ করেছিল।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সমছেদ হোসেন বলেন, স্কুলে ১৩০-৪০জন শিক্ষার্থী থাকলেও অন্য একটি প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষার্থী দেখিয়ে ফলাফল ভাল দেখায়। স্কুলের নামে ১০৫ শতকের পুকুর (চুক্তি মূল্য বছরে ৮৫-৯২ হাজার) ও আবাদি জমি ২ একর (চুক্তি মূল্য বছরে ৭০-৮০ হাজার টাকা) উপার্জন হয়। এত টাকা আয় হলেও স্কুলের ঘরের দরজা, জানালা ও টিন ভাঙ্গা। বৃষ্টির সময় শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারে না। স্কুলের আয়কৃত অর্থ আত্মসাৎ ও সামনে কয়েকটি নিয়োগের বাণিজ্য করার জন্য প্রধান শিক্ষক তার পছন্দের লোকজনকে কমিটিতে নেওয়ার জন্য তিনি মনগড়া তালিকা তৈরি করে উপজেলায় যাচাই-বাছাই করার জন্য পাঠিয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় রায় বলেন, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিদ্যালয়ে কমিটি গঠনের কাজ চলছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশিদা আক্তার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।