আনোয়ার হোসেন আকাশ রাণীশংকৈল থেকে..
সময়টা ১৯৭১সাল সারাদেশের মাটিতে পাকিস্তানী সেনাদের হানা। কিন্তু দমন করতে পারেনি বাংলার দামাল সন্তানদের। যুদ্ধচলাকালীন সেই সময়ের অনুভূতিগুলো জানতে চাওয়া হয় যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধার আবু সুফিয়ানের কাছ থেকে।
তিনি হলেন ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলাধীন ৪নং লেহেম্বা ইউপি’র উমরাডাংগী গ্রামের মৃত বেশারত আলীর কৃতী সন্তান বীরমুক্তিযোদ্বা আবু সুফিয়ান।
একান্ত সাক্ষাৎকারে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এই প্রতিনিধিকে বলেন ১৯৬৬ সালে তিনি সেনাবাহিনীর চাকরিতে যোগদান করেন (কোড নাম্বার ১৩২৭৬৬৬) পরে তিনি কর্মরত ক্যান্টনমেন্ট প্রধানের নির্দেশনা মোতাবেক ৩০-১২-১৯৭০ সালে বাড়িতে রিজার্ভে চলে আসেন।
এরপরে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আলী আকবর(সাবেক সংসদ) ও নফিজউদ্দীন মাস্টারের নেতৃত্বে যুবকদের নিয়ে সংগ্রাম কমিটি গঠন করেন। এই সংগ্রাম কমিটির নির্দেশে বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ানকে দায়িত্ব দেওয়া হয় যুবকদের অস্ত্র ট্রেনিং করার জন্য।
২৭-০৩-১৯৭১ সালের এইদিনে অস্ত্র প্রশিক্ষণে প্রায় ৮৪ জন যুবককে রানীশংকৈল ডাকবাংলা মাঠে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক (সেনা সদস্য) আবু সুফিয়ান।
যুবকদের নিয়ে প্রশিক্ষণ চলে প্রায় ২২দিন। প্রশিক্ষণরত এই যুবকদের দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্হানে মাঝে মাঝে অপারেশন পরিচালনা করে কয়েকজন পাকিস্তানীকে হত্যা করেন আবু সুফিয়ান লসহ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকেরা মিলে।
কয়েকদিন পাকসেনারা অতর্কিতভাবে রাণীশংকৈলে প্রবেশ করে এবং কয়েকজন সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে আসে বর্তমান মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠে সেখানেই তাদেরকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করেন পাকিস্তানী সেনারা।
এর একদিন পরেই আবু সুফিয়ানের বাড়িতে হানা দেয় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় পিস কমিটির গোয়েন্দা সদস্যদের তথ্য অনুযায়ী।
তখন আবু সুফিয়ান নিজের জীবন বাঁচানোর তাগিদে বাড়ির দরজার পিছন দিয়ে কুলিক নদীতে দৌড়ে গিয়ে ঝাঁপ দেন।
এতেও পাকিস্তানী সেনারা পিছু ছাড়েনি, নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার পরেও পানিতে গুলি করতে শুরু করে।
নদীতে পানি বেশি থাকায় ভাগ্যক্রমে গুলি থেকে বেঁচে যান তিনি ।
পানি থেকে উঠে পালানোর সময় পাকিস্তানী সেনাদের ছোড়া গুলিতে ডান পায়ের হাটুর উপরে লাগলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
তখন আবু সুফিয়ানকে পাকিস্তানী সেনারা দুই হাত ধরে মাটির সাথে গড়িয়ে গড়িয়ে নিয়ে আসে নিজ বাড়িতে এবং বাড়িতে যা কিছু ছিল সব লুটপাট করেন পিস কমিটির সদস্যরা।
এসব ঘটনার প্রত্যক্ষ্য সাক্ষী ছিলেন স্থানীয় গ্রামের কয়েকজন যুবক যেমন মৃত হামজু আলীর ছেলে মারফত আলী,মনির উদ্দিনের ছেলে এরশাদ আলী, আজম আলীর ছেলে বদিরুল (বর্তমান রানীশংকৈল সোনালী ব্যাংক মার্কেটের মালিক) মজুশেখ আলীর ছেলে জমিরউদ্দীন সহ নাম না জানা আরো অনেকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন আবু সুফিয়ানকে তখন পাকিস্তানীরা এভাবে নির্যাতন করতে করতে ধরে নিয়ে যাওয়ার পরে কি করেছে আমরা আর তা কিছু বলতে পারিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন মডেল স্কুলে ধরে নিয়ে আসার পরে আমাকে রিক্সায় করে পীরগঞ্জ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে আমাকে কয়লার ইঞ্জিনে ট্রেনে করে দিনাজপুর ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে আমাকে অনেক নির্যাতন করেন পাকিস্তানী বাহিনী।
নির্যাতনের পরে আমাকে পাকিস্তানী সেনাদের হত্যা করার অপরাধে দীর্ঘ ৭ মাস এমএলএ এর মামলা দিয়ে রংপুর জেলহাজতে বন্দী রাখেন।
জেলখানাতেও বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা আমার সাথে। দীর্ঘ ৭ মাস জেলহাজতে থাকার পর পরে বাড়িতে ফিরে আসি। বাড়িতে আসার পরে মানুষজন জানতে পারে আমি বেঁচে আছি।
আনোয়ার হোসেন আকাশ রাণীশংকৈল থেকে..
সময়টা ১৯৭১সাল সারাদেশের মাটিতে পাকিস্তানী সেনাদের হানা। কিন্তু দমন করতে পারেনি বাংলার দামাল সন্তানদের। যুদ্ধচলাকালীন সেই সময়ের অনুভূতিগুলো জানতে চাওয়া হয় যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধার আবু সুফিয়ানের কাছ থেকে।
তিনি হলেন ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলাধীন ৪নং লেহেম্বা ইউপি’র উমরাডাংগী গ্রামের মৃত বেশারত আলীর কৃতী সন্তান বীরমুক্তিযোদ্বা আবু সুফিয়ান।
একান্ত সাক্ষাৎকারে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এই প্রতিনিধিকে বলেন ১৯৬৬ সালে তিনি সেনাবাহিনীর চাকরিতে যোগদান করেন (কোড নাম্বার ১৩২৭৬৬৬) পরে তিনি কর্মরত ক্যান্টনমেন্ট প্রধানের নির্দেশনা মোতাবেক ৩০-১২-১৯৭০ সালে বাড়িতে রিজার্ভে চলে আসেন।
এরপরে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আলী আকবর(সাবেক সংসদ) ও নফিজউদ্দীন মাস্টারের নেতৃত্বে যুবকদের নিয়ে সংগ্রাম কমিটি গঠন করেন। এই সংগ্রাম কমিটির নির্দেশে বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ানকে দায়িত্ব দেওয়া হয় যুবকদের অস্ত্র ট্রেনিং করার জন্য।
২৭-০৩-১৯৭১ সালের এইদিনে অস্ত্র প্রশিক্ষণে প্রায় ৮৪ জন যুবককে রানীশংকৈল ডাকবাংলা মাঠে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক (সেনা সদস্য) আবু সুফিয়ান।
যুবকদের নিয়ে প্রশিক্ষণ চলে প্রায় ২২দিন। প্রশিক্ষণরত এই যুবকদের দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্হানে মাঝে মাঝে অপারেশন পরিচালনা করে কয়েকজন পাকিস্তানীকে হত্যা করেন আবু সুফিয়ান লসহ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকেরা মিলে।
কয়েকদিন পাকসেনারা অতর্কিতভাবে রাণীশংকৈলে প্রবেশ করে এবং কয়েকজন সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে আসে বর্তমান মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাঠে সেখানেই তাদেরকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করেন পাকিস্তানী সেনারা।
এর একদিন পরেই আবু সুফিয়ানের বাড়িতে হানা দেয় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় পিস কমিটির গোয়েন্দা সদস্যদের তথ্য অনুযায়ী।
তখন আবু সুফিয়ান নিজের জীবন বাঁচানোর তাগিদে বাড়ির দরজার পিছন দিয়ে কুলিক নদীতে দৌড়ে গিয়ে ঝাঁপ দেন।
এতেও পাকিস্তানী সেনারা পিছু ছাড়েনি, নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার পরেও পানিতে গুলি করতে শুরু করে।
নদীতে পানি বেশি থাকায় ভাগ্যক্রমে গুলি থেকে বেঁচে যান তিনি ।
পানি থেকে উঠে পালানোর সময় পাকিস্তানী সেনাদের ছোড়া গুলিতে ডান পায়ের হাটুর উপরে লাগলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
তখন আবু সুফিয়ানকে পাকিস্তানী সেনারা দুই হাত ধরে মাটির সাথে গড়িয়ে গড়িয়ে নিয়ে আসে নিজ বাড়িতে এবং বাড়িতে যা কিছু ছিল সব লুটপাট করেন পিস কমিটির সদস্যরা।
এসব ঘটনার প্রত্যক্ষ্য সাক্ষী ছিলেন স্থানীয় গ্রামের কয়েকজন যুবক যেমন মৃত হামজু আলীর ছেলে মারফত আলী,মনির উদ্দিনের ছেলে এরশাদ আলী, আজম আলীর ছেলে বদিরুল (বর্তমান রানীশংকৈল সোনালী ব্যাংক মার্কেটের মালিক) মজুশেখ আলীর ছেলে জমিরউদ্দীন সহ নাম না জানা আরো অনেকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন আবু সুফিয়ানকে তখন পাকিস্তানীরা এভাবে নির্যাতন করতে করতে ধরে নিয়ে যাওয়ার পরে কি করেছে আমরা আর তা কিছু বলতে পারিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন মডেল স্কুলে ধরে নিয়ে আসার পরে আমাকে রিক্সায় করে পীরগঞ্জ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে আমাকে কয়লার ইঞ্জিনে ট্রেনে করে দিনাজপুর ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে আমাকে অনেক নির্যাতন করেন পাকিস্তানী বাহিনী।
নির্যাতনের পরে আমাকে পাকিস্তানী সেনাদের হত্যা করার অপরাধে দীর্ঘ ৭ মাস এমএলএ এর মামলা দিয়ে রংপুর জেলহাজতে বন্দী রাখেন।
জেলখানাতেও বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা আমার সাথে। দীর্ঘ ৭ মাস জেলহাজতে থাকার পর পরে বাড়িতে ফিরে আসি। বাড়িতে আসার পরে মানুষজন জানতে পারে আমি বেঁচে আছি।