পঞ্চগড় প্রতিনিধি\ গতকাল মঙ্গলবার ছিল পঞ্চগড় মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর স্বাধীনতাকমী বীর মুক্তিযোদ্ধারা ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহায়তায় তুমুল যুদ্ধ করে পঞ্চগড়কে পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে দখলমুক্ত করেন। পাকিস্তানের পতাকা জ্বালিয়ে পঞ্চগড়ের মাটিতে ওড়ানো হয় বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা। প্রতি বছরের মতো এবারও নানা আয়োজনে পালিত হয় পঞ্চগড় মুক্ত দিবস। এ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সকালে কালেক্টরেট চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা নিয়ে শহীদ বধ্যভূমির বেদিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ও শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড এবং জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান শেখসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জনপ্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। এর আগে সার্কিট হাউস বঙ্গবন্ধু ম্যুারাল ও মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ও মোনাজাত করা হয়। দিবসটি পালনে বিকেলে জেলা পরিষদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা এবং সন্ধ্যায় শহীদ মিনার চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। এতে জেলা পর্যায়ের সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত মুক্ত থাকে পঞ্চগড়। এরপর পাক হানাদার বাহিনী সড়ক পথে অগ্রসর হয় পঞ্চগড়ের দিকে। ১৭ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে তারা পঞ্চগড় দখল করে নেয়। দীর্ঘ সাত মাস যুদ্ধ চলার পর মুক্তি ও মিত্রবাহিনী পর্যায়ক্রমে পাক হানাদার বাহিনীর ওপর প্রচন্ড আক্রমন চালিয়ে ২০ নভেম্বর অমরখানা, ২৫ নভেম্বর জগদলহাট, ২৬ নভেম্বর শিংপাড়া, ২৭ নভেম্বর তালমা, ২৮ নভেম্বর পঞ্চগড় সিও অফিস এবং একই দিনে আটোয়ারী ও মির্জাপুর মুক্ত করে। মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে পাক হানাদার বাহিনীর ওপর প্রচন্ড আক্রমন করে। আক্রমনের ফলে অবশেষে ২৯ নভেম্বর পঞ্চগড় মুক্ত হয়।