পঞ্চগড় প্রতিনিধি \ শনিবার বিএনপির গণমিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা ও মারপিটের অভিযোগ এনে পুলিশ বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় ৫টি মামলা করেছে। শনিবার রাতে এসব মামলা করা হয় বলে পঞ্চগড় থানা সূত্রে জানা গেছে। এসব মামলায় ৮১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও প্রায় এক হাজার ২শ জনকে আসামী করা হয়েছে। শনিবার রাতেই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বিএনপি-জামাতের ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে পঞ্চগড় সদরে বিএনপির ১ জন, দেবীগঞ্জে বিএনপির ১ জন, বোদায় বিএনপির ১ জন, আটোয়ারীতে বিএনপির ২ জন এবং তেঁতুলিয়ায়া জামাতের ২ জন। পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা মামলা ও আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে সংঘর্ষের সময় নিহত বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরেফিনের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রোববার দুপুরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাদ আছর বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের হরিপুর জোত দেবীকান্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাযা শেষে হরিপুর চন্দনপাড়া কবরস্থানে নিহত বিএনপি নেতা আরেফিনের মরদেহ দাফন করা হয়। জানাযায় পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, যুগ্ম আহবায়ক ও পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক মেয়র তৌহিদুল ইসলাম, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ বিএনপির জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
নিহত বিএনপি নেতার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম
পঞ্চগড়ে বিএনপির গণমিছিলে পুলিশ-বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় নিহত বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরেফিনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্বামীর কথা মনে করতেই বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন স্ত্রী চামেলী বেগম। নিহত আব্দুর রশিদ আরেফিন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
গতকাল রোববার সকাল থেকে নিহত আরেফিনের বাড়ি বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের চন্দনপাড়ায় স্বজনেরা আসতে থাকে। নিহত বিএনপি নেতার পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নিতে বাড়িতে ছুটে আসেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদসহ জেলা উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এদিকে স্বামীর কথা মনে হতেই বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন বিএনপি নেতার আব্দুর রশিদ আরেফিনের স্ত্রী চামেলী বেগম। কান্না জড়িত কন্ঠে স্বামী হত্যার বিচার দাবী করে বলেন, যারা আমার স্বামীকে মেরেছে আল্লাহ তুমি তাদের বিচার করো। বাবা হত্যার বিচার চেয়ে ছেলে আব্দুল্লাহ আল মাহী বলেন, যারা আমার বাবাকে মেরেছে আমি তাদের বিচার চাই। এরা অনেক লোককে মেরেছে। আরো মানুষ মারবে।
এসময় জেলা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, এখন কোন বিএনপি নেতা মারা গেলে পুলিশের নতুন সুর হৃদরোগে মারা গেছে। এ ঘটনায় আগামীকাল (আজ সোমবার) সারা দেশে বিএনপি গণকর্মসূচি দেবে। মঙ্গলবার বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা নিহত বিএনপি নেতা আরেফিনের বাড়িতে স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানাতে আসবেন। এসময় তিনি বলেন, এ হত্যার জবাব আমরা আন্দোলনের মাধ্যমেই দেবো।