ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের হাওলাদার হিমাগার লিমিটেডের স্বত্ত¡াধিকারী আব্দুস সালাম হাওলাদারের প্রায় শত কোটি টাকার বন্ধকীয় সম্পত্তি ষড়যন্ত্র ও প্রতারণার মাধ্যমে গোপনে বিক্রি করে দেওয়ার পায়তারা করা হচ্ছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আব্দুস সালাম হাওলাদার।
১৩ জানুয়ারি দুপুরে তিনি তাঁর হিমাগার প্রাঙ্গণে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, তিনি তার হিমাগার, জমি, রেস্ট হাউস, আবাসিক হোটেলসহ সুপার মার্কেট ও বাসভবন বন্ধক দিয়ে যমুনা ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখা থেকে ২০১০ সালে ২৯ সেপ্টেম্বর ৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। তিনি ভবিষ্যতে এখানে একটি স্টিল মিল স্থাপন করবেন বলে ব্যাংকের পরামর্শে সব সম্পত্তি ব্যাংকে বন্ধক দেন। পরপর দু’বছর আলুর বাজারে ধসের কারণে ব্যবসায়ী ও কৃষক আলু উত্তোলন না করায় তিনি সময়মত ঋণ পরিশোধ করতে পারেন নি। তাছাড়া ব্যাংক শতকার ১৩ টাকার পরিবর্তে শতকরা ১৯ শতাংশ সুদ ধার্য করায় ঋণের পরিমাণ অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। তবু তিনি এর মধ্যে ৫ কোটি ৩ হাজার টাকা ব্যাংকে পরিশোধ করেন। এর পরেও প্রচুর লেনদেন থাকা সত্বেও তার চলতি মূলধন হিসাব স্থগিত করে দেয় ব্যাংক।
তিনি ২৫ লাখ টাকা জমা দিয়ে ১০ শতাংশ হারে সুদসহ ঋণ পরিশোধের সুযোগ দিতে আবেদন করেন। এই সময় ব্যাংকের পাওনার পরিমাণ ছিল ১১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ব্যাংকের ঠাকুরগাঁও শাখা ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা জমা ও দুই বছরে কিস্তিতে পরিশোধ করার শর্ত সাপেক্ষে মোট সাড়ে ৯ কোটি টাকা ঋণ চূড়ান্ত করার জন্য ২ বার একটি প্রস্তাব হেড অফিসে পাঠায়। কিন্তু শাখার প্রস্তাব ‘বোর্ড’ অগ্রাহ্য করে বাতিল করে দেয়। শুধু তাই নয়, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ হাওলাদার হিমাগারের মালিক আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির একটি মামলাও ঠুকে দেয়। আব্দুস সালাম হাওলাদার বিষয়টি অবহিত করে সমাধানের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য, অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন স্থানে দরখাস্ত প্রেরণ করেন।
এক পর্যায়ে ব্যাংক মাত্র ১৩ কোটি টাকায় শতকোটি টাকার বন্ধকীয় সব সম্পত্তি গোপনে বিক্রি করে দেওয়ার পায়তারা করে। তারা তার বিরুদ্ধে প্রায় ১৪ কোটি টাকার চেক জালিয়াতি মামলা দায়ের করে। এমনকি ব্যাংক ‘প্রথম খবর’ ও ‘মুক্ত খবর’ নামে দু’টি পত্রিকায় ডাম্পিং করে ভুয়া নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে সম্পত্তি বিক্রির ষড়যন্ত্র করে। পরে দেখা যায় ঐ পত্রিকা দুটির মূল কপিতে নিলাম বিজ্ঞপ্তি আদৌ ছাপা হয়নি।
যমুনা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এই ষড়যন্ত্র ও তার সম্পত্তি বিক্রি করার পায়তারার প্রতিবাদ জানিয়ে ও ব্যাংকের অবৈধ তৎপরতা বন্ধের দাবি জানান তিনি সংবাদ সম্মেলনে।
যমুনা ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখার ব্যবস্থাপক মোস্তাহারুল ইসলাম মঞ্জু এ সব অভিযোগের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া মন্তব্য করা যবেনা বলে এড়িয়ে যান। সংবাদ সম্মেলনে জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ৫০জন সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।