দিনাজপুরে ত্রিভুজ প্রেমের পরিণতিতে কলেজ ছাত্র শাহরিন আলম বিপুল হত্যাকান্ডের ঘটনায় মুল হত্যাকারীসহ ৪জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় দুইটি মোটরসাইকেল এবং ৪টি এন্ড্রোয়েট মোবাইল ফোন উদ্ধার করন তারা।
আটককৃতরা হলো, দেলোয়ার হোসেন দিনাজপুর সদরের শালকি(বোয়ালমারী) গ্রামের মোঃ রশিদের ছেলে, তার সহযোগী শাকিব শাহরিয়ার দিনাজপুর শহরের পুরাতন ৬নং উপশহরের পাওয়ার হাউজ এলাকার উজ্জল হোসেনের ছেলে, আশরাফুল হোসেন মিলন দিনাজপুর সদরের নিশ্চিন্তপুর এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে, আসিফ মাহমুদ হৃদয় দিনাজপুর শহরের ৭নং উপশহরের হাউজিং মোড় এলাকার হামিদুর রহমানের ছেলে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ।
পুলিশ সুপার জানান, প্রথমে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে গত ৬মার্চ জেলা ষ্টেডিয়ামের পূর্ব উত্তর দিকের গ্যালারীর নিচে ময়লা আবর্জনার মধ্যে অর্ধগলিত অবস্থায় সিটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র শাহরিন আলম বিপুলের লাশ উদ্ধার করেন তারা। তার আগে নিখোঁজের বিষয়ে গত ৪ মার্চ কোতয়ালী থানায় সাধারন ডায়রি করেন তার বড়ভাই শাহরিয়ার আলম। লাশ শনাক্তের পরে একজনকে আসামি করে নিয়মিত মামলা রেকর্ডসহ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকান্ডের মুল পরিকল্পাকারি দেলোয়ার হোসেন এবং তার সহযোগি শাকিব শাহরিয়ার, আসিফ মাহমুদ এবং আশরাফুল হোসেন মিলনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, একজন কলেজগামী প্রেমিকার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেমিক শাহরিন আলম বিপুলকে সরিয়ে দিতে ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে ভাব জমিয়ে ফাঁদে ফেলে আরেক প্রেমিক দেলোয়ার হোসেন। ফটোগ্রাফিতে তার দুর্বলতার বিষয় জেনে নিয়ে ক্যামেরা দেওয়ার কথা বলে নির্জন স্থান হিসেবে স্টেডিয়াম এলাকায় ডেকে আনেন দেলোয়ার হোসেন। এসময় হত্যার জন্য অপেক্ষায় থাকা অন্য সহযোগিদের সহায়তায় তাকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে লাশ স্টেডিয়ামের গ্যালারীর নিচে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে রেখে গিয়েছিল তারা।
হত্যাকান্ড নিশ্চিত করে শাহরিন আলম বিপুলের মোবাইল ফোনের ম্যাসেঞ্জারের সব তথ্য মুছে ফেলে হত্যাকারিরা। কিন্তু পুলিশী তদন্তে সব রহস্য উম্মোচন করে হত্যাকারিদের চিহ্নিত করাসহ প্রথম দফায় ৪জন গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ১৬১ধারায় থানায় এবং ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী রেকর্ডসহ আরো তথ্য উদ্ধারের প্রয়োজনে রিমান্ডের আবেদনসহ আসামিদের আদালতে তুলে দিবেন তারা।
গনমাধ্যমকে অবহিত করার সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মমিনুল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল মাসুমের সমন্বিত পরিকল্পনায় সদর সার্কলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ জিন্নাহ আল মামুন, কোতোয়ালী থানার ইনচার্জ তানভিরুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মাওলা শাহ্ এবং তদন্তকারী অফিসার উপ পরিদর্শক শামীম হক প্রমুখ।