মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আদেশ অমান্য করে নবাবগঞ্জের অসহায় কৃষক হানিফ মন্ডলের গভীর নলকুপ বিএডিসি কর্তৃক জোবরদখলের প্রতিবাদে দিনাজপুরে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন রুমে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন দিনাজপুর নবাবগঞ্জ উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের মো: হানিফ মন্ডল।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পুত্র জোয়ার মন্ডল বলেন, পাকুরিয়া মৌজার জেএল নং ২২৬ দাগ নং ৩১৪ এর জায়গায় বিএডিসি কর্তৃক ১৯৮৭ সালের ৭ জুন ঋনের টাকায় একটি গভীর নলকুপ (গনকুপ) স্থাপন করেন। একই তারিখে বিএডিসির উপজেলা প্রতিনিধি ও পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা এবং সোনালী ব্যাংক ম্যানেজারের উপস্থিতিতে গনকুপটিকে পাকুরিয়া কৃষক সমবায় সমিতির নিকট হস্তান্তর করা হয়। পাকুরিয়া কৃষক সমবায় সমিতি গৃহিত ঋনের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে সমিতির ৬/১/২০০৩ইং ৫নং অধিবেশনের সভায় অংশীদার ৭ সদ্যস্যের অনুকলে ঋন পরিশোধের ক্ষমতা ও মালিকানা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তীতে ৬জনই হানিফ মন্ডলের নামে ঋন পরিশোধের মাধ্যমে একক মালিকানা দলিল লিখে দেয়। সেই শর্ত অনুযায়ী হানিফ মন্ডল গভীর নলকুপের সমুদয় ঋনের টাকা পরিশোধ করেন এবং গত ২৩/০২/০৬ইং পল্লী উন্নয়ন এর সর্ম্পূণ ঋন পরিশোধ হয়েছে মর্মে সার্টিফিকেট গ্রহন করেন। তখন থেকেই হানিফ মন্ডল গভীর নলকুপটি ব্যবহার করে আসছিলো। হঠাৎ বিএডিসি কর্তৃপক্ষ এই গভীর নলকুপে অপারেটর নিয়োগ দেয় এবং গভীর নলকুপটি জোবর দখল করে নেয় এবং তখন থেকে পরিচালনা করে আসছে। নলকুপটি ফিরে পেতে বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা তদবির করেও বিচার না পেয়ে সব শেষে আদালতে মামলা করেন হানিফ মন্ডল। মহামান্য উচ্চ আদালত হানিফ মন্ডলকে মালিকানা প্রদান ও বিএডিসি পরিচালনা করে যে অর্থ আয় করেছে তার ব্যাংক সুদ সমেত সমুদয় টাকা আগামী ৬০ দিনের মধ্যে প্রদানের জন্য নির্দেশ দেন এবং একই সাথে বিএডিসিকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। মহামান্য উচ্চ আদালতের ( মামলা নং ৫২৩৫/২০১৪ইং ) আদেশের রায়কে বিএডিসি প্রত্যাখান করে সুপ্রীম কোর্টে আপীল করে। মহামান্য সুপ্রীমকোর্ট বিএডিসি‘র আপীল মামলা নং ১২৯১/২০১৮ইং এর আদেশে শুধুমাত্র জরিমানার টাকা মওকুফ করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। এসময় হানিফ মন্ডল সাংবাদিকদের বলেন, মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়নের লক্ষে আমি দিনাজপুর জেলা প্রশাসক, ইউএনও নবাবগঞ্জ ও বিএডিসি নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করেছি। জেলা প্রশাসক মহোদয় ইউএনও নবাবগঞ্জকে উচ্চ আদালতের নিদের্শ বাস্তবায়নের জন্য আদেশ দেন, কিন্ত দীর্ঘদিনেও আদেশের কোনো প্রতিফলন ঘটেনি।
দীর্ঘ ১৭ বছর মামলা চালিয়ে নিজের পক্ষে রায় পেয়েও আজ আমি অসহায়ের মত দিনাজপুরের স্থানীয় সরকার প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সুবিচার ও উচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করাতে পারছি না।যারা মহামান্য সুপ্রীম কোটের আদেশ অমান্য করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি ও বিচারকের আদেশ কার্য্যকরের দাবী করছি। এসময় সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন মো: হানিফ মন্ডল ও রুমন বাবু।