দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ফারহানা আক্তার চুমকি হত্যা মামলায় সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার আওলাই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও স্বামী আব্দুর রাজ্জাক, মাইক্রো ড্রাইভার এমদাদুল হক ও আরেক এমদাদুল হক।
বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যা মামলায় গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ।
ঘটনার বিবরণে পুলিশ সুপার জানান, চলতি বছরের ২৮জুলাই সকালে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের বুলাকিপুর ইউপির বুলাকিপুর সিংগানালা গ্রামের একটি আমবাগানে অজ্ঞাত মধ্যবয়সী মহিলার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মরদেহের পরিচয় পাওয়া গেলে ভিকটিমের পিতা ঘোড়াঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে এসেছে যে, হত্যার শিকার চুমকি ও তাঁর স্বামী এজাজুল হক সনি জয়পুরহাটের পাচবিবি উপজেলার বর্গাহাটি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিল। সেই সুবাধে তার স্ত্রী চুমকির সাথে সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং ২০২০সালে তাদের গোপনে বিয়ে হয়। পরবর্তীতে বিয়েকে কেন্দ্র করে পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হলে ভিকটিম ও সাবেক চেয়ারম্যানের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরী হয়। এতে সে ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে ঘটনার আগেরদিন। এবং তার বিশ্বস্থ সহযোগি এমদাদুল হক ও গাড়ীর ড্রাইভার এমদাদুল হককে সাথে নিয়ে ভিকটিমের গলায় নাইলনের রশি দিয়ে পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘোড়াঘাটের মোজাম পার্কের রাস্তার পাশে আমবাগানের কোণায় মরদেহ ফেলে রেখে যায় বলে জানান পুলিশ সুপার।
মামলার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশনা ও তত্তাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুম এর পরিকল্পনায় সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার হাকিমপুর সার্কেল শরিফুল ইসলাম এর নেতৃত্বে ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামানসহ অনেকে জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা, জয়পুরহাট, বগুড়া ও গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন জায়গার ঝটিকা অভিযান চালায়। একপর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকারী স্বামীসহযোগী দুইজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ ।
উল্লেখ্য, জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শাহ ইফতেখার আহম্মেদ পিপিএম- এর নির্দেশনায় ঘোটাঘাট থানা পুলিশ সহ পুলিশের বিশেষ টিম তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে গত ২ আগস্ট মূল আসামীর সহযোগী এমদাদুল হককে আটক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে আসামী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। পরেরদিন ৩ আগস্ট মূল আসামী আঃ রাজ্জাক ও গাড়ীর ড্রাইভার এমদাদুল হককে জয়পুরহাট জেলা থেকে গাড়ী সহ গ্রেপ্তার করা হয়।