মোঃ আশরাফুল ইসলাম,তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি :
তেঁতুলিয়ায় পৌষ মাসে রাত-সকালে কুয়াশা না থাকলেও তীব্রশীত অনুভূত হচ্ছে। যার কারণে
বিপাকে পড়েছে নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া প্রান্তিক জনপদের মানুষগুলো। সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে
বইছে শৈত্যপ্রবাহ। সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৮ ঘরে বিরাজ করছে। এ সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ডে
বইছে শৈত্যপ্রবাহ। তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার সকাল
৯টায় ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে ও খবর নিয়ে জানা যায়, সকালে কুয়াশা না থাকলেও বরফের মতো শীত
অনুভূত হচ্ছে। দিনের বেলায় সূর্যের রোদ থাকলেও থাকে না তেজ। বিকেল গড়লেই উত্তর কোণ হতে
থেকেই বয়ে আসে হিমেল হাওয়া। এ হিমেল হাওয়ায় বাড়তে থাকে শীতের মাত্রা। রাত বাড়তে থাকলে
ফাকা হয়ে যায় জনবহুল জায়গাগুলো। প্রান্তিক মানুষগুলো শীত নিবারণে বাড়ির উঠোনে খড়-কুটো
আগুন তাপ নিতে দেখা যায়। এ অঞ্চলটি হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতের নিকটবর্তী হওয়ায় প্রান্তিক
এ উপজেলাটি শীতাঞ্চল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তীব্র শীতের দাপটে নি¤œবিত্ত ও দিন মজুরদের সকাল সকাল কাজে যেতে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে জীবিকা ও পরিবারের কথা চিন্তা করে বাধ্য হয়েই কনকনে শীতের মধ্যেই কাজে যেতে দেখা যায়।
বোরো ধান, গম, ভুট্টা চাষাবাদ ও চা বাগানগুলোতে শীতে কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে
শ্রমিকদের।
শীত নিবারনে শহরের হাটবাজারের ফুটপাতের কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।
এসব ক্রেতাদের মধ্যে কেউ নি¤œবিত্ত, কেউ শ্রমিক আবার কোন বিত্তশালীরাও কিনে নিচ্ছেন
আধা পুরোনো গরম কাপড় জ্যাকেট, স্যুয়েটার, বেøজারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় গরম কাপড়।
সোমবার বিকেলে ফুটপাতে দোকানগুলো থেকে গরম কাপড় কেনার সময় কথা আয়েশা খাতুন,
জমিলা ও আসমা খাতুনের সাথে। তারা জানান, ভাই আমার বাবুর জন্য শীতের কাপড় খুঁজি। পছন্দ
হলেও এখানেও দাম বেশি।
এদিকে শীতের মধ্যে বেড়েছে শীতজনিত নানান ব্যাধি। হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে জ্বর-সর্দি,
কাশি, অ্যাজমা, সাইনোসাইটিস, ইসনোফিলসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা
গেছে। শীতে করোনার প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা থাকায় চিকিৎসকরা রোগীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার
পরামর্শ দিচ্ছেন।
উপজেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, পৌষ মাসের এক সপ্তাহ ধরেই
তীব্রশীত। সাথে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। গত ২০ ডিসেম্বর থেকেই ৮ এর ঘরে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা
রেকর্ড হচ্ছে। সোমবার সকাল ৯টায় ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা
হয়েছে। ক্রমে শীতের তীব্রতা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, দেশের অন্যান্য জায়গার তুলনায় এ অঞ্চলের
তীব্রতা অনেক বেশি। তাই সরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং শীত
মোকাবেলায় সবধরণের প্রস্তুতি রয়েছে।
আশরাফুল ইসলাম