পুজার্চনা ও ধর্মীয়-ভাবগাম্ভির্যের মধ্যদিয়ে আজ সোমবার ভোরে শেষ হবে দিনাজপুরে হিন্দু ধর্মালম্বীদের ৩ দিনব্যাপী ৪৯তম মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহা¯œানযাত্রা উৎসব। দেশ ও দেশের শান্তি কামনা ও শিব ঠাকুরকে রাজি-খুশি করতে প্রতিবছর ঝুলন যাত্রা থেকে রাখি পূর্নিমার মাঝে সোমবার তিথিতে এই কৈলাশপতির মহা¯œানযাত্রা উৎসব পালন করেন হিন্দু ধর্মালম্বীর নারী-পুরুষরা।
গত শনিবার রাতে হাজার হাজার ভক্ত-পূন্যার্থী বাস-ট্রাকযোগে ৩৪মাইল দুরে বীরগঞ্জ উপজেলার মহুয়গাঁ গ্রাম শশ্মান ঘাট মন্দির সংলগ্ন পূনর্ভবা নদীর উত্তরমুখি প্রবাহিত জল সংগ্রহ করতে যায়। সেখানে রাতব্যাপী কীর্ত্তন চলে। পরদিন রোববার আকাশে সুর্য্য দেখা যায় তখন সেই উত্তরমুখি প্রবাহিত জল সংগ্রহ করতে নদীতে নেমে পড়েন হাজার হাজার নারী-পুরুষ। সুর্য্য দেবতাকে প্রনাম করে সেই জল সংগ্রহ করে সেখানে শিব মন্দিরে জল ঢেলে পুনরায় একই নিয়মে জল সংগ্রহ করে সেখানকার পুরোহীত দ্বারা সেই জল পবিত্র করে দিনাজপুরের শহরের আনন্দ সাগরস্থ শ্রী শ্রী গোষ্ঠধাম প্রাঙ্গনে শিব মন্দিরের উদ্দেশ্যে নগ্ন পদব্রজে যাত্রা শুরু করেন। প্রতিবছর এই মহুয়া নদীতে হাজার হাজার ভক্ত-পুন্যার্থীরা পুন্য জল সংগ্রহ করতে আসেন।
অপরদিকে একই নিয়মে আনন্দ সাগর হতে ৭মাইল পূর্বে অবস্থিত কাঁউগাঁও-সাহেবগঞ্জ হাট সংলগ্ন আত্রাই নদীর উত্তরামূখি প্রবাহিত পুণ্যজল সংগ্রহ করেন হাজারো নারী-পুরুষ ভক্তবৃন্দ। পুন্যজল সংগ্রহ করে নগ্ন পদব্রজে আনন্দ সাগরের মন্দির অভিমুখে যাত্রা করেন।
দুই দিক থেকে পুন্যজল সংগ্রহ করার পর ভক্ত-পুন্যার্থীরা রবিবার রাতে আনন্দ সাগরস্থ শ্রী শ্রী গোষ্ঠ ধামে অবস্থান করেন এবং রাতব্যাপী কীর্ত্তন করেন ও শোনেন। পরে সোমবার ভোর ৪টায় প্রথমে কমিটির পক্ষ থেকে শিব মন্দিরে শিব ঠাকুরের মাথায় জল ঢেলে পূজা-অর্চনা করা হয়। পরে শিব ঠাকুরের মাথায় জল ঢালা শুরু করেন হাজার হাজার ভক্ত-পুন্যার্থীরা। পরে সকালে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরন করা হয় কমিটির পক্ষ থেকে।
শিব ঠাকুরের মাথায় জল ঢালতে আসা রাজু বিশ্বাস,মিতনি ঘোষ ও শিক্ষার্থী জ্যোতি অনুভুতি ব্যক্ত করে বলেন, আমরা পুন্য করতে ও দেশ ও দশ জাতে ভালো থাকে সেজন্য এই পুজা করি। আবার কেউ এই পুজা করেন যাতে তার মনোবাসনা পুরণ হয়, লেখাপড়ায় ভালো করতে পারেন সেজন্য। এই পুজার মাধ্যমে শিব ঠাকুরের মাথায় জল ঢাললে স্বামীর আশির্বাদ পাওয়া যায় এবং স্বামীর মঙ্গল হয়।
উল্লেখ্য, দিনাজপুরে ১৯৭৪সালে এই মহা¯œানযাত্রা আনন্দসাগর মন্দিরে এই উৎসব শুরু হয়। পরে প্রতিবছর এই উৎসব পালন করা হয়। যে কোন মনোবাসনা নিয়ে কেউ যদি মন থেকে এই শিব ঠাকুরের পুজা করে তবে ঠাকুর সেটি পূর্ন করে হয়। সেই বিশ্বাস থকে প্রতিবছর আমরা মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহা¯œানযাত্রা পুজা করে আসছে বলে জানা যায়।