পঞ্চগড় \ পঞ্চগড় জেলা সদরের মীরগড় এলাকার জান্নাতারা বেগম। ¯œাতক পাশ করে এখন পুরোদস্তুর একজন গৃহিণী। স্বামী রুহুল আমীন পঞ্চগড় চিনিকলের মৌসূমী কর্মচারী এবং স্টক ব্যবসায়ী। একটি চা বাগানের মালিকও তিনি।
জান্নাতারা বেগম একই এলাকার মীরগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি। সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তিনি বদলে দিয়েছেন স্কুলের চিত্র। ঘড়ির কাটায় ঠিক যখন সকাল নয়টা ঠিক তখনই তিনি হাজির হন স্কুলে। তার কঠোর মনিটরিং এ শিক্ষার্থী উপস্থিতি ও শিক্ষার মান বেড়েছে দু’টোই। নিয়মিত স্কুল মনিটরিং এর পাশাপাশি জাতীয় দিবস থেকে শুরু করে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৃক্ষরোপণ, মা সমাবেশ, উঠোন বৈঠক, মেধাবী ও বৃত্তি পরীক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদানসহ সকল অনুষ্ঠানে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন তিনি। শিক্ষাথীদের বাড়তি আনন্দ দেয়ার জন্য বার্ষিক বনভোজনে নিজে উপস্থিত থাকার পাশাপাশি নিজের টাকায় বাসভাড়া করে দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের আলোকিত মানুষ হবার জন্য বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের বাহাতি স্পিনার ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণা ও বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীকে সেই বনভোজনে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। শুধু তাই নয়, স্কুলের অফিস কক্ষ সজ্জিত করাতে নিজের টাকায় পর্দা লাগানোসহ স্কুলের উন্নয়ন সব সময় সিদ্ধহস্ত তিনি।
জান্নাতারা বলেন, আমার বাবা আফজাল হোসেন ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। ছয় ভাই বোনদের মধ্যে সবার ছোট ও আদরের হওয়ায় বাবা আমার নাম রাখেন জান্নাতারা। স্কুলে যাবার বয়স না হলেও বাবা আমাকে স্কুলে নিয়ে যেতেন নিয়মিত। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখি আমিও একদিন স্কুল শিক্ষক হবো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমার সে ইচ্ছে পুরণ হয়নি। একমাত্র মেয়ে রাফিয়া জান্নাত রোজ বাড়ির পার্শ্ববর্তি মীরগড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী হওয়ার সুবাদে গত বছর সেখানে অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত হই। পরে সবার সম্মতিতে আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তিনি জানান, দেশে অনেক খ্যাতনামা স্কুল আছে। আর এর পেছনে ওইসব স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির চমৎকার কিছু পরিকল্পনা ও নিবিড় সম্পর্ক আছে। আমি সেই সম্পর্ক তৈরী করতে চেষ্টা করছি। শ্বশুরবাড়ি এলাকার স্কুল যদি খ্যাতনামা হয় তবে সেই ইতিহাসের স্বাক্ষী হওয়াও অনেক গর্বের।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক নূর আজম বলেন, সভাপতি মহোদয় স্কুলের সার্বিক উন্নয়নে সর্বাত্বক সহযোগিতা ও চেষ্টা করছেন। নিয়মিত স্কুলের খোঁজ খবর নেয়ার পাশাপাশি ক্লাস মনিটরিং করছেন। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের সাথেও যোগাযোগ করে শিক্ষার্থীদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। প্রতিটি মিটিংয়ে উপস্থিত থেকে তিনি শিক্ষার মান উন্নয়নে আমাদের নির্দেশনামূলক পরামর্শ দিচ্ছেন।