চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাট্রির কার্য নির্বাহী পরিষদের সঙ্গে পৌর পরিষদের মতবিনিময়
মডেল পৌরসভায় রূপান্তরে সহযোগীতা চাই- ভারপ্রাপ্ত মেয়র
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুন্দর পৌরসভা উপহার দিতে পারি- চেম্বার সভাপতি
দিনাজপুর পৌরসভাকে একটি মডেল পৌরসভায় রূপান্তর করতে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে মত বিনিময় করছেন পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল।
বুধবার ফাতেহুল আলম দুলাল মিলনায়তনে দিনাজপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাট্রির কার্য নির্বাহী পরিষদের সঙ্গে পৌর পরিষদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পৌরসভার সমস্যা, সম্ভাবনা ও সমাধান নিয়ে আলোচনা প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
শুরুতেই ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করে দিনাজপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাট্রির কার্য নির্বাহী পরিষদের সহযোগীতা কামনা করেন। এ সময় তিনি বলেন,পৌরসভায় ১৪ কোটি ৯৬ লাখ ৭৯হাজার ৭৮৭ টাকা হোল্ডিং টেক্স বকেয়া রয়েছে,। এই বকেয়া কর আদায়ে বড় বড় খেলাপীদের তালিকা হালনাগাদ করে তাগাদা দেয়া হচ্ছে, নবায়ন না করায় ট্রেড লাইসেন্সের ৩৪ লাখ ৭৯১০ টাকা বকেয়া রয়েছে। সাইন বোর্ডের বকেয়া ৪০ লক্ষ টাকা । এছাড়াও অনেক ব্যবসায়ী ট্রেড লাইসেন্স করেননা। আবার যারা করেন তারা প্রয়োজন ছাড়া নবায়ন করেননা। অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স পক্রিয়া চালুর বিষয়েও তিনি মতামত চান।
অনুমতি ছাড়া যারা পৌরসভার ফি জমা না দিয়ে বিলবোর্ড স্থাপন করছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। অনুমতি ছাড়া বিলবোর্ড স্থাপন করা হলে তা উচ্ছেদ করা হবে। বিভিন্ন পোলে ডিস ও ইন্টারনেটের তার লাগানো হয়েছে। করের আওতায় না আসলে তা অপসারণ করা হবে।
এছাড়াও যারা পৌরসভার জায়গা দখল, রাস্তার উপর ব্যবসায়ীক মালামাল রাখা, নির্মাণ সামগ্রী রাখা,চলাচলের জন্য রাখা ফুটপাত দখল এবং রাস্তার উপরে যারা বিভিন্ন দোকানপাট উচ্ছেদে মাইকিং করা হবে। এরপরও কাজ না হলে প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে।
পৌরসবার প্রায় ১শ একর জমি বিভিন্ন ভাবে দখল হয়ে আছে তা উদ্ধারে তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই পৌরসভার সম্পত্তি উদ্ধারে অভিযান শুরু করা হবে।
পৌরসভাকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে ক্লিন শহরে পরিণত করতে রাতে ময়লা আবর্জনা পরিস্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মশক নিধন অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনে ভোগান্তি কমাতে নীতিমালা অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে প্রতিদিন নিদিষ্ট সংখ্যক নিবন্ধন করা হচ্ছে। শহর পরিচ্ছন্ন কাজে ব্যবহারীত গাড়ী সংকট ও বিকল গাড়ী গুলি মেরামতের বিষয়ও আলোচনায় উঠে আসে।
এছাড়াও পৌরসভার কাছে পিডিপির পাওনা ২৪ কোটি টাকা। ভারপ্রাপ্ত মেয়র দায়িত্ব নেয়ার মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে ৯ লক্ষ ৮২ হাজার ৪১৩ টাকা পরিষদ করেছেন।
এছাড়াও পিডিপি দিনাজপুর অফিসের কাছে পৌরসভার জমির ভাড়া বাবদ দাবী ৩২ কোটি ৮১লাখ ৩১ হাজার ৬২৫ টাকা আদায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল এ সময় ২২ দিনে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ ও পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে দিনাজপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাট্রির কার্য নির্বাহী পরিষদের সহযোগীতা ও পরামর্শ চান।
মতবিনিময় সভায় দিনাজপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাট্রির কার্য নির্বাহী পরিষদের সভাপতি রেজা হুমায়ুন ফারুক চৌধুরী শামীম বলেন, যানজোট নিরসনের জন্য দিনাজপুর শহরে ইজবাইক চলাচলের জন্য একটি সিদ্ধান্ত ছিল যে গ্রামের ইজবাইক শহরে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে পৌরসভা এবং সদর উপজেলা লাইসেন্স দিয়ে ৬হাজার ইজবাইক চলাচল করবে ভাগ করে। সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত এক রঙের, আবার দুপুর ২ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আরেক রঙের।কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। দিনাজপুর শহরে যত ইজিবাইক চলে দেশের আর জেলা শহরে েেতা ইজিবাইক চলেনা। প্রতিদিন দূর্ঘটনা ঘটছে। এদের নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী।
তিনি বলেন, আমি দিনাজপুরকে ভালবাসি, আপনিও দিনাজপুরকে ভালবাসুন। দিনাজপুর পৌরসভা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যায় সেই প্রত্যাশা নিয়ে এগিয়ে যান। দিনাজপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাট্রির কার্য নির্বাহী পরিষদ আপনা পাশে আছে।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর চালকল মালিক গ্রæপের সভাপতি মোছাদ্দেক হোসন, দিনাজপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাট্রির কার্য নির্বাহী পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ জর্জিস আনম, নির্বাহী সদস্য সুজাউর রব চৌধুরী, শাহ রেজাউর রহমান হিরু, ডিসিসিআই পরিচালক মোঃ শামীম কবির, প্রতাপ কুমার শাহা পানু, বাদশা ইমাম আরাফাত, মোঃ সানোয়ার হোসেন, কাউন্সিলর জুলফিকার আলী স্বপন, একেএম মাসুদুল ইসলাম, আল মামুন রশিদ,কাজী আশরাফ উজ জামান বাবু,
সভায় উপস্থিত ছিলেন, পৌরসভার নিবার্হী প্রকৌশলী মিনারুল ইসলাম খান,সহকারী প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ময়েজ উদ্দন,মাকসুদা পারভীন মিনা প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় দিনাজপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাট্রির কার্য নির্বাহী পরিষদের সদস্যরা বলেন, হোল্ডিং টেক্স আদায়ে আদায়কারী বাড়ীয়ে বাড়ী বাড়ী গিয়ে তা আদায় করতে হবে। ট্রেড লাইসেন্সের নিয়ম কানুন সহজ করতে হবে। পৌরবাসী খুব বেশী কিছু চায়না, তারা চায় রাস্তা ঘাট ভাল থাকুক, ড্রেন পরিস্কার হউক, ময়রা আবর্জনা সময় মত পরিস্কার করা হউক, রাস্তার পলে বাতি জলুক। তাহলেই পৌরবাসী খুজি।
তারা র্দীঘদিন পর রাতের বেলঅ পৌর শহরের মযলা আবর্জনা পরিস্কার করার জন্য ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে ধন্যবাদ জানান।