টানা কয়েকদিনের ঘনকুয়াশার সাথে হিমেল হাওয়ায় কনকনে শীত নিবারনে দিনাজপুরে সব উপজেলায় বেড়েছে গরম কাপড়ের বেচাকেনা। ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত শপিংমলে সব দোকানেই বেড়েছে শীতের কাপড়ের বেচাকেনা। পাশাপাশি শহরের কাপড়ের পাইকারি বাজারগুলোও দু’সপ্তাহ ধরে জমজমাট। তবে শপিংমলের চেয়ে ফুটপাতের দোকানেই ভীড় লক্ষনীয়। এছাড়াও ভ্রাম্যমাণভাবে বাশের ফ্রেম বানিয়ে শীত নিবাড়নের জন্য নি¤œআয়ের মানুষদের মাঝে অল্প টাকায় পায়ের মোজা, হাতমোজা, কান টুপিরও বিক্রি বেড়েছে।
প্রতিবছর শীতের আগমনকে মৌসুমি হকারদের আনাগোনা বেড়ে যায়।বাড়তি রোজগারের আশায় এসব হকার ফুটপাতের পাশাপাশি অলিগলিতেও ফেরি করে। অনেকে শীতের কাপড় কিনে মজুত করলেও তা বিক্রি করতে পারেননি। এবছরও শুরুতে শীতের দেখা মেলেনি। তখন পসরা সাজিয়ে বসলেও ক্রেতা পাওয়া যায়নি। তবে গত কয়েকদিন শীত বাড়ায় ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। ফুটপাতে দামও কিছুটা নাগালের মধ্যে থাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করছেন লোকজন। শীত যত বাড়বে হাটবাজারসহ ফুটপাতের বাজার তত বেশি গরম হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, তীব্র শীত অনুভূত হওয়ার পর থেকে ফুটপাতে ছোটদের বিভিন্ন সাইজের গরম কাপড়, বয়স্কদের সোয়েটার, কোট, বেøজার, মাফলারসহ বিভিন্ন আইটেমের শীতের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। হকাররা অনেকে ৩০টাকা, ৫০টাকা, ১০০-২০০টাকা হাঁকডাক করে এসব কাপড় বিক্রি করছেন। সোয়েটার ও জ্যাকেটের দাম মানভেদে ২০০ থেকে ৮০০ টাকা, ছেলেদের সোয়েটার ১০০ থেকে ৫০০ টাকা, ছেলেদের জ্যাকেট ৩০০ থেকে ৩০০০টাকা, ছোটদের সোয়েটার ৫০ থেকে ৬০০ টাকা, মাফলার ৪০ থেকে ২০০ টাকা এবং গরম টুপি ৫০ থেকে ২৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
দিনাজপুর শহরের হকার্স মার্কেট, জেলাখানা মার্কেটে,ঘোড়াঘাট সদরসহ ওসমানপুর, ডুগডুগী হাট, বলগাড়ী ও রাণীগঞ্জ হাটে রাস্তার দু’পার্শ্বে, বিরামপুর পশুহাটের মোড়ে শীতের জামা কাপড়, জ্যাকেট, সুয়েটার বিক্রির দোকানে বেশী ভীড় হচ্ছে।
রানীগঞ্জ বাজারের পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ জানান, শীতকে কেন্দ্র করে রানীগঞ্জ বাজারে পুরাতন কাপড়ের অস্থায়ী মার্কেট গড়ে উঠে। আমরা সৈয়দপুর ও ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পুরাতন কাপড়ের গাঁট ক্রয় করে এনে এখানে বিক্রি করি।
এদিকে, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দিনাজপুরে আসেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন তারা। ভ্রাম্যমাণ এসব ব্যবসায়ীরা বাশের ফ্রেম বানিয়ে নি¤œ আয়ের মানুষদের মাঝে অল্প টাকায় পায়ের মোজা, হাতমোজা,কান টুপি বিক্রি করছেন। ভ্রাম্যমাণ দোকানি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ধারাইকান্দি গ্রামের মোঃ ফরিদুল ইসলাম বলেন,আমরা অনেকেই এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রতিবছর শীত মৌসুমে শীতবস্ত্র বিক্রয়ের জন্য আসি। এখানে ভালো বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বিরামপুর
বিরামপুর(দিনাজপুর)প্রতিনিধিঃ বিরামপুর পশুহাটের মোড়ে পুরাতন কাপড় দড়িতে এবং ছোট চৌকির উপর সেজে রেখে বিক্রি করা এক ব্যাবসায়ীকে এবার শীতে কেমন বেচাকেনা হচ্ছে এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে,সে জানায় তার নাম লালু সে সৈয়দপুর থেকে প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে এই বিরামপুর হাটে তাইওয়ান, কোরিয়া, জাপান প্রভৃতি থেকে নিয়ে আসা পুরাতন কাপড়ের গাঁট থেকে বাছাই করে ভালো কাপড়গুলো বিক্রি করে আসছেন। তিনি জানান বিরামপুর পশুহাটে কাপড়ের দাম ভালো পাওয়া যায় এবং যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ভালো আয় হয়ে থাকে।
ঘোড়াঘাট
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর)প্রতিনিধি.দিনাজপুরে ঘোড়াঘাট উপজেলার হাট-বাজারের ফুটপাতের দোকান গুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। গত কয়েক দিনের শীতের তীব্রতার কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের লোকজন ফুটপাতের দোকানে গরম কাপড় কিনতে ভিড় করছেন।
উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারের কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বললে তারা জানান,সাধারণত স্বল্প মূল্যে ভালো মানের কাপড় পাওয়া যায়। বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের শীতের কাপড় বেশি পাওয়া যায়।এজন্যই তারা পুরাতন কাপড়ের দোকান থেকেই বাচ্চাদের বা বাড়ির মহিলাদের জন্য সুয়েটারসহ গরম কাপড় ক্রয় করে থাকেন।
ফুটপাতে পায়ের মোজা হাতমোজা কান টুপি বেচাকেনার হিড়িক
প্রতি বছর শীতের গরম কাপড় সামগ্রী নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দিনাজপুরে আসেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন তারা। ভ্রাম্যমাণ ভাবে বাশের ফ্রেম বানিয়ে শীত নিবাড়নের জন্য নি¤œ আয়ের মানুষদের মাঝে অল্প টাকায় পায়ের মোজা, হাতমোজা,কান টুপি বিক্রয়ের জন্যে। ভ্রাম্যমাণ দোকানি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ধারাই কান্দি গ্রামের মৃত আলতাফ আলী প্রধানের পুত্র মোঃ ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমরা অনেকেই এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রতি বছর শীত মৌসুমে শীত বস্ত্র বিক্রয়ের জন্য আসি।