খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি \ দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ১৫২জন ভুট্টা চাষির মাঝে সোয়া কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক।
এ উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার গোয়ালডিহি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ভুট্টা চাষী ও কৃষি উদ্যোক্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা এবং স্বল্প মুনাফায় গ্রামীন আয় উৎসারী কর্মকান্ডে ও ৪ শতাংশ মুনাফায় ভুট্টা চাষে বিনিয়োগ বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে খানসামা উপজেলার ১৫২জন কৃষকের মাঝে ১ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাবীবুর রহমান।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির রাজশাহী অঞ্চলের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অঞ্চল প্রধান মোঃ শাহরিয়ার খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তাজ উদ্দিন। বক্তব্য রাখেন, নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি পিএলসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শহীদ হোসেন, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এসএমই প্রধান সাদাত আহমাদ খান, খানসামা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি অফিসার হাবিবা আকতার, গোয়ালডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন, গোয়ালডিহি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শেখ আফজাল হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির রানীরবন্দর শাখার এভিপি ও ম্যানেজার মোঃ আওলাদ হোসেন।
উপজেলার কাচিনিয়া গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দীন বলেন, “আমি গত বছর সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। সেই টাকা দিয়ে আমি ভুট্টা ও রসুন আবাদ করেছি। ভুট্টা ও রসুন আবাদ করে লাভ হয়েছে। অন্যান্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে গেলে জমির কাগজপত্র ব্যাংকে জমা দিতে হয়। অন্যান্য ব্যাংকের কাছে অনেকবার পাওয়ার পরও ঋণ পাওয়া যায় না। কিন্তু সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক নিজেই আমাদের কাছে এসে ঋণ প্রদান করছে। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক কোন ধরনের কাগজপত্র ছাড়াই ঋণ প্রদান করছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষি কার্ড দেখালেই ঋণ পাওয়া যায়। আমি সময়মত ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি এবার আবার ঋণ নিচ্ছি।”
একই এলাকার কৃষক মহির উদ্দিন বলেন, এই এলাকার অধিকাংশ কৃষক গরীব। তারা আবাদ করার জন্য বিভিন্ন এনজিও ও ব্যাংক থেকে বেশি সুদে ঋণ নেয়। এতে ফসল আবাদ করে ঋণ পরিশোধ করার পর তাদের হাতে কোন টাকা থাকে না। কিন্তু সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের কম সুদে ঋণ নিয়ে কাজ করা যায়। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে টাকা ফসল আবাদের কাজে লাগানো সম্ভব হয়। ফসল উঠার পর ঋণ পরিশোধ করে দিয়ে হাতে কিছু টাকা লাভ হিসেবে থাকে। তাই এই কার্যক্রমকে আর স¤প্রসাতি করার জন্য অনুরোধ করছি।
উপজেলার ভাবকি চন্ডিপাড়ার কৃষক রাহেনা পারভিন বলেন, “আমি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দুটি ছোট গরু কিনেছি। সেই গরুগুলো বড় করে বিক্রি করে দিয়েছি। এখন আমার বাসায় তিনটি গরু রয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাবীবুর রহমান বলেন, দিনাজপুর একটি কৃষি প্রধান জেলা। এই জেলার বিভিন্ন ধরনের খাদ্যশস্য উৎপাদন করা হয়। পাশাপাশি এই জেলার মাটি ভুট্টা আবাদের জন্য খুবই উপযোগী। ভুট্টা চাষ করার জন্য স্বল্প সুদে কৃষকদের মাঝে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এই এলাকার কৃষকদের মাঝে ঋণ বিতরণ করেছি। ঋণগ্রহিতারা সময়মত ঋণের টাকা ফেরত দিয়েছে। তাই আমরা এবার আরও বেশি ঋণ প্রদান করছি। এই কার্যক্রম ভবিষ্যতে আরও বাড়ানো হবে।