পঞ্চগড় প্রতিনিধি\সীমান্ত হত্যা ও বিদেশী আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে হানিফ বাংলাদেশীর নেতৃত্বে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে শুরু হওয়া লাশের মিছিল পঞ্চগড়ে পৌছেছে। গতকাল শনিবার বিকেলে জেলা শহরের মুক্তমঞ্চ থেকে মিছিলটি পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। লাশের মিছিল বাংলাদেশের সাথে ভারত ও মিয়ানমার সাথে সীমান্ত রয়েছে এমন সব জেলা ও উপজেলা প্রদক্ষিণ করে প্রতিবাদ জানাবে। কর্মসূচিতে রয়েছেন এন ইউ আহম্মেদ, সৌরভ বেলাল ও আরিফ। কর্মসূচি যশোরের বেনাপোল উপজেলায় গিয়ে শেষ হবে।
কর্মসূচি সম্পর্কে হানিফ বাংলাদেশী বলেন, বাংলাদেশের প্রতিবেশি দুইটা দেশ ভারত ও মিয়ানমার সব সময় বাংলাদেশের উপর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে, ভারত সব সময় সীমান্তে নিরিহ মানুষকে পাখির মত গুলি করে হত্যা করছে। কিছুদিন আগেও বাংলাদেশের একজন বিজিবি সদস্যকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। গত ৪ মাসে ভারত সীমান্তে ২১ জন বাংলাদেশী বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকারের সংগঠনের হিসেবে ২০১০ সাল থেকে প্রায় এক হাজার ২৭৬ জন বাংলাদেশীকে বিএসএফ হত্যা করেছে। আহত হয়েছেন আরও এক হাজার ১৮৩ জন। আরেক প্রতিবেশি দেশ মিয়ানমার তাদের ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে অত্যাচার করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। গত ৫ ফেব্রæয়ারি মিয়ানমারের অভ্যন্তরিণ যুদ্ধে মর্টারসেলে দু’জন বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হয়েছেন। সীমান্ত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালেও আমি প্রতিকী লাশ কাঁধে নিয়ে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম ফেলানীদের বাড়ী পর্যন্ত পদযাত্রা করেছি। তিনি আরও বলেন, বাংলদেশের জনগন সব সময় প্রতিবেশি ও বন্ধু দেশগুলোর সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ দুইটি বাংলাদেশের সাথে সব সময় বৈরি আচরণ করে। সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার পরে বলা হয় এরা গরু চোর-চোরাকারবারি। হতে পারে এরা গরু চোর বা চোরাকারবারি। এদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। গুলি করে হত্যা করবে কেন? ভারত যদি তাদের দেশের পাচারকারিদের দমন করে তাহলে বাংলাদেশের পাচারকারিরা এমনিতে বন্ধ হয়ে যাবে।
হানিফ বাংলাদেশী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যখন যে দলই এসেছে সে দলই দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের মানুষের আত্ম মর্যাদা বিসর্জন দিয়ে বিদেশিদের দ্বারস্থ হয়েছে। শাসকদের এই দূর্বল নতজানুর কারনে ভারত ও মিয়ানমার সব সময় বাংলাদেশের উপর আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। বিদেশী অন্য দেশগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরিণ বিষয়ের উপর খবরদারি করার সাহস পাচ্ছে। ৩০ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন দেশের মানুষ কখনও কোন দেশের আগ্রাসন দাদাগিরি মেনে নেয়নি। নতুন প্রজন্মও কোন দেশের আগ্রাসন মেনে নেবে না। বাংলাদেশের মানুষ আত্ম মর্যাদা নিয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চায়।