দিনাজপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে এবং তাকে বদলির দাবিতে স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
রবিবার (১৮ আগস্ট ২০২৪) বেলা ১২টায় স্কুল মাঠে বিক্ষোভ শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে স্কুলের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের প্রধান শিক্ষক মোছাঃ আখতারা পারভীন বিগত কয়েক বছর ধরে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত। এসব কারণ ছাড়াও আমরা আরও অনেক অভিযোগের কথা শুনেছি যেসব অভিযোগ প্রমাণ করে যে, তিনি একজন দায়িত্বশীল প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ্য নন। আমরা শিক্ষার্থীবৃন্দ বিশ্বাস করি তাকে বদলি করা হলে বিদ্যালয়ে একটি সুষ্ঠু শিক্ষা পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। আমরা কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা চাই না, বরং একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই।
স্মারকলিপিতে বিষয়টি বিবেচনা করে অতি দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানান শিক্ষার্থীরা।
এদিকে জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করে দিনাজপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছে জিলা স্কুলের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
স্মারকলিপির অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকার পরিচালককে এবং রংপুর অঞ্চলের উপপরিচালককে দেয়া হবে বলেও জানান শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, দিনাজপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোছাঃ আখতারা পারভীনের বিরুদ্ধে ১৭টি অভিযোগ করেছেন। এসব অভিযোগের মধ্যে
রয়েছে বিগত ১০ বছর ধরে তিনি দিনাজপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন যেখানে যেকোনে সরকারি বিদ্যালয়ে এত দীর্ঘ সময় ধরে কোনো শিক্ষকের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের নজির নেই, স্কুলের প্রধান হলেও তিনি কখনোই সঠিক সময়ে স্কুলে আসেন না এবং নিজের দায়িত্বের প্রতি সর্বদা উদাসীন থাকেন,
বিগত বছরগুলোতে স্কুলের উন্নয়নের জন্য বাজেট আসলেও তিনি তা বিদ্যালয়ের উন্নয়নে ব্যবহার করেননি যার দরুণ বর্তমানে স্কুলের অভ্যন্তরীণ অবস্থা শোচনীয়, বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে তার ব্যবহার নিকৃষ্ট, আমাদের জীবনের অন্যতম কারিগর স্কুলের শিক্ষকদের সাথে খারাপ ব্যবহার,
স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে তার ব্যবহার অত্যন্ত কটু যা একজন সুস্থ মানসিকতার মানুষের ব্যবহার হতে পারেনা, অভিভাবকগণ বিদ্যালয়ে কোনো সেবা নিতে গেলে তাদের সাথে তিনি অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেন, বিদ্যালয়ে কোনো প্রকার বনভোজন ক্রীড়া প্রতিযোগীতা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মেলা অনুষ্ঠিত হয় না, বছরের শুরুতে ম্যাগাজিন মুদ্রন গবেষণাগার নিরাপত্তা খেলাধুলা বাবদ ২২লক্ষের অধিক টাকা নেয়া হলেও সেগুলোর কোনো ব্যবহার দেখা যায়না,
কম্পিউটার ল্যাব লাইব্রেরী বিজ্ঞান রুম থাকা সত্তে¡ও সেগুলোর ব্যবহার এবং পরিচর্যা নেই, স্কাউট বিএনসিসি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা রুম থাকা সত্তে¡ও সেগুলো ব্যবহার করতে দেয়া হয় না,
ইনডোর গেমস রুম তৈরী করা হলেও তা তালাবদ্ধ থাকে, স্কাউটের জন্য বছরে ৮০ হাজারের অধিক টাকা জমা হলেও ক্যাম্পে যাওয়ার সময় কোনোরূপ বাজেট বিদ্যালয় থেকে দেয়া হয়না,
বিদ্যালয়ের রেজাল্ট প্রস্তুতকরণ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি করার অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ে পূর্বে টিফিন হিসেবে ২টি পুড়ি দেয়া হলেও বর্তমানে তা একটিতে গিয়ে ঠেকেছে, বিদ্যালয়ের বাউন্ডারির দেয়াল মানচিত্রের প্রতিকৃতি দীর্ঘসময় যাবত সংস্কার করা হয়নি এবং আশপাশে ময়লা জমে গেলেও সেগুলো পরিষ্কার করার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়না, বিদ্যালয়ের হোস্টেলের মাঠ থাকা সত্তে¡ও সেখানে আমরা খেলতে যেতে পারিনা। বিভিন্ন মাদকাসক্ত মানুষ সে স্থান দখল করে রেখেছে। এ বিষয় তাকে জানালে তিনি উল্টো শিক্ষার্থীদের ধমক দেন ও বিদ্যালয়ে বর্তমানে কোনো ক্লাব সক্রিয় নেই। কারণ ক্লাবের কোনো উদ্যোগকেই তিনি সাধুবাদ জানান না এবং ফান্ডিং দেন না।