বীরগঞ্জ, দিনাজপুর থেকে বিকাশ ঘোষঃ সনাতন ধর্মাবলম্বলীদের বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দিনাজপুরের বীরগঞ্জে প্রতিমা তৈরির ধূম পড়েছে। মূৎশিল্পীদের (কারিগর) দম ফেলার সময় নেই। ইতোমধ্যেই প্রতিমার মাটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এরপর রঙ ও সাজসজ্জার কাজ। এ অঞ্চলে প্রতিমা তৈরির কারিগর মূলত দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। গতবছরের চেয়ে এবছর একটি পুজো বেড়ে ১৬৩ মণ্ডপে চলছে পুজোর প্রস্তুতি।
এসব কারিগররা দিনাজপুরের বিভিন্ন মন্দিরের ভিতরে প্রতিমা তৈরি করছেন। কেউ কেউ মন্দিরের ভেতরে প্রতিমা তৈরি করছে। বুধবার বিকালে বীরগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের শিমুল তলা কালি মন্দির,নতুনপাড়া মন্দির, বিষ্ণু মন্দির,সনাতনপাড়া মন্দির, ১নং ওয়ার্ডের কলেজ পাড়া মন্দির, কেন্দ্রীয় মন্দির, মহিলা ডিগ্রী কলেজ মাঠ ও কুমারপাড়া মন্দির গিয়ে দেখা গেছে, বাশ – কাঠ -রশি- কাদা মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত মূৎশিল্পীরা। তৈরি প্রতিমাগুলো দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ বিভিন্ন ধর্মের লোকজন।
বীরগঞ্জ পৌরসভার দৈনিক বাজার কেন্দ্রীয় মন্দিরে প্রতিমা তৈরি কাজে নিয়োজিত দিনাজপুর জেলার চিরিবন্দর উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের মৃৎশিল্পী জয়ন্ত মালী এবার দিনাজপুর সদরে ২টি,বীরগঞ্জ মহিলা কজেল মাঠে ১টি ঠাকুরগাঁও শান্তিনগরে ১টি,
খানসামা উপজেলার জওয়ার কালিবাজারসহ ৭টি মণ্ডপে প্রতিমা করছেন তিনি। জয়ন্তী জানান,জেলা ও উপজেলার
বিভিন্ন স্থানে থেকে আসা লোকজন প্রতিমার দরদাম করছেন। কেউ অগ্রিম দিচ্ছেন। আবার অনেকে পূর্বেই দরদাম ঠিক করে প্রতিমা তৈরির কাজ করচ্ছেন। তিনি আরও জানান,
দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ৬-৭ জন মিলে
প্রতিমা তৈরি করে আসে। এ বছরেও ৭টি স্থানে প্রতিমা তৈরি করছেন তিনি। ৭টি প্রতিমা সেট তৈরি করেছেন। প্রতিটি সেটে দুর্গাদেবীর সঙ্গে রয়েছে অসুর,সিংহ,মহিষ, গনেশ, সরস্বতী,কার্তিক, লক্ষী ও মহাদেব প্রতিমা। গত বছরের তুলনায় এবছর প্রতিমা তৈরিতে দাম কম। প্রতিটি প্রতিমার আকার ভেদে
খরচসহ ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিমা তৈরির সহকারী জ্যোতি ও খর্ঘ জানান, আমরা ৬-৭ জন শ্রমিক ৫শী টাকা হাজিরায় দিন-রাত কাজ করছি। এবছর কাজের চাপ কম। বর্তমান বাজারে এতো কম হাজিরা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বীরগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক মহেশ চন্দ্র রায় জানান, প্রতি বছর ধর্মীয় সম্প্রতি বজায় রেখে সর্বজনীন দুর্গা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই ১৬৩টি মন্ডপ কমিটি এখন প্রতিমা স্থাপনের কাজ করছে। এ লক্ষ্যেই এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে প্রতিমা তৈরির কারিগর। আইনশৃঙ্খলা উন্নতি রাখতে সবসময় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তাই দুর্গা উৎসবে সবার মধ্যে আনন্দ অনেক বেড়ে যাবে। এবছর ২ অক্টোবর মহালয়া এর মধ্যে দিয়ে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভ সুচনা।
পঞ্জিকা মতে এবছর দেবীর এবার দেবীর দোলায় আগমন। ফল— মড়ক এবং এবার দেবীর ঘোটকে গমন, ফল— ছত্রভঙ্গ। উল্লেখ্য, সনাতন ধর্মালবম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা আগামী ৮ অক্টোবর মহাপঞ্চমী, ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী,১০ অক্টোবর মহাসপ্তমী,১১অক্টোবর মহাষ্টমী,১২ অক্টোবর মহানবমী ও ১২ অক্টোবর মহাদশমীর মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে শারদীয় দুর্গাপূজার।