মোঃ শামসুল আলম, বোচাগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি\ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা থামছেই না! ছাত্র শিক্ষককের দাবির মুখে গত ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ইশতেফা পত্রে স্বাক্ষর করেছেন সেতাবগঞ্জ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ রফিকুল্যাহ। গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনে আওয়ামী সরকার পতন হওয়ার পর এই অধ্যক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্ণীতির বিরুদ্ধে তার পদত্যাগ চেয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ রাজপথে আন্দোলন করেছে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। সে সময় এই অধ্যক্ষ ছুটিতে ছিলেন। ছুটি শেষে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর তার দূর্ণীতি তদন্তের জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্যদের সমন্বয়নে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটি দীর্ঘ একমাস এ অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দূর্ণীতির বিষয়ে তাকে বিভিন্ন রকম জেরা করেছেন। সেই তদন্তের রিপোর্ট জনসম্মুখে আসার আগেই হঠাৎ ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মাদ্রাসা অশান্ত হয়ে উঠে। মাদ্রাসার বর্তমান ও বহিরাগত শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসার প্রধান ফটকের সামনে সড়কে হাই ব্রেঞ্চ ফেলে সড়ক অবরোধ করে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় আইনশৃঙলা বাহিনীর অনুরোধে শিক্ষার্থী সড়ক অবরোধ কর্মসূচী বাদ দিয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্বিত করে তোলে মাদ্রাসা ক্যাম্পাস। এক পর্যায় ছাত্র শিক্ষকের আন্দোলনের মুখে ইশতেফা পত্রে স্বাক্ষর করেন এ শিক্ষক। পদত্যাগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ডালিম সরকার জানান, জোর করে পদত্যাগ করালে সেটি গ্রহন যোগ্য হবে না। তার বিরুদ্ধে সুনিদৃষ্ট অভিযোগ থাকলে সেটি যথাযথ কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে। এ বিষয়ে পদত্যাগকারী অধ্যক্ষ মোঃ রফিকুল্যাহ জানান, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ খন্ডানোর সুযোগ না দিয়ে শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দিয়ে অত্যাচার করে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। উল্লেখ থাকে যে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা মন্ত্রনালয় কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখা বাংলাদেশ সচিবালয় ঢাকা এর উপসচিব মোঃ কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত ০৪-০৯-২০২৪ ইং তারিখের ৫৭.০০.০০০০.০৮০.৯৯.০০২.২০-১২৫২ নং- স্বারকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অনুয়ায়ী দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জোর পূর্বক পদত্যাগ ও নানাভাবে হেনস্থা করার ঘটনা ঘটছে যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দীন মাহমুদ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধের আহবান জানিয়েছেন। এছাড়াও তিনি নির্দেশ প্রদান করেছেন যেসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূর্ণীতি ও অপকর্মের অভিযোগ আছে তা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্ঠার এমন নির্দেশনার পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টির পেছনে যারা জরিত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মানুষ।