পঞ্চগড় প্রতিনিধি\ পঞ্চগড়ে জুলাই বিপ্লবের ডামাডোলে এক প্রভাবশালী কর্তৃক দেড়শ বছরের প্রাচীন কাঁঠাল গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর পঞ্চগড় জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ গাছটি জব্দ করে। কিন্তু প্রায় এক মাসেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাসীরা জেলা প্রশাসক বরাবরে গণ অভিযোগ দাখিল করেছে। তবে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির দাবি জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করে মসজিদের কাজের জন্য তিনি মরা গাছটি কর্তন করেছেন।
মজিবর রহমান নামের এক ব্যক্তি গত ২৯ আগষ্ট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, পঞ্চগড় সদর উপজেলার মীরগড় হতে তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর পর্যন্ত জেলা পরিষদের একটি রাস্তা রয়েছে। ওই রাস্তার ভেলকুপাড়া নামক স্থানে ব্রিটিশ আমলের একটি বিশালাকার কাঁঠাল গাছ ছিল। যার বাজার মূল্য প্রায় দেড় লাখ টাকা। ওই গাছটি মেরে ফেলার জন্য গত দুই বছর আগে গেছে বাকল খুলে নেয়ায় গাছটি মরে যায়। জুলাই বিপ্লবের সময় দেশের আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতির সুযোগে গত ৪ আগষ্ট ওই গ্রামের মৃত আবু ওয়ারেজ প্রধানের ছেলে আবুল কাশেম প্রধান রাজু কাঠুরিয়া এসে গোড়া থেকে গাছটি উপড়ে ফেলে টুকরো করে পঞ্চগড় জেলা শহরের বাটাইফ্লাই শো রুমের পাশে একটি স’মিলে রাখে। অভিযোগ পাওয়ার পর জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ অফিসের লোক দিয়ে ওই স’মিলে গিয়ে ৫টি বড় লগ ও কিছু খড়ি জব্দ করে সেখানেই জমা রাখে। কিন্তু অনেক দিন পেড়িেেয় গেলেও গাছ কর্তনকারীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় গ্রামবাসীরা জেলা প্রশাসকের বরাবরে একটি গণ অভিযোগ দাখিল করে। তারা সেখানে উল্লেখ করে, এর আগেও আবুল কাশেম প্রধান রাজু ও তার ভাই আবু নাছের প্রধান ওই রাস্তার ধারের ৩টি কাঁঠাল গাছ ও একটি আম গাছ কেটে বিক্রয় করেছিল।
এ বিষয়ে আবুল কাশেম প্রধান রাজুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি চুরি করে গাছ কাটিনি। গাছটি রাস্তার ধারে হলেও আমাদের পূর্ব পুরুষরই গাছটি লাগিয়েছিলেন। আমাদের গ্রামে একটি মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে। রাস্তার ধারের ওই মরা গাছটি কেটে মসজিদের কাজে লাগানোর জন্য আমি জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত আবেদন করেছিলাম। তিনি জেলা পরিষদের সদস্য রুবেল ইসলামকে দায়িত্ব প্রদান করেছিলেন। তিনি সরেজমিনে মরা গাছটি দেখে মৌখিকভাবে আমাকে কেটে মসজিদের কাজে লাগানোর অনুমতি দিয়েছিলেন। তার মৌখিক অনুমতি নিয়েই আমি গাছটি কেটে স’মিলে রেখেছিলাম। এর আগে গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
পঞ্চগড় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর স’মিল থেকে আমরা গাছটির কয়েকটি লগসহ খড়ি জব্দ করেছি। গাছ কাটার বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। সত্যতা পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।