আমি বাংলাদেশ বসবাস করি। বাংলাদেশের রাজনীতি সংস্কৃতি,মাটি ও মানুষের কথা লেখার অধিকার রাখি। এরই সূত্রে ধরে বলতে চাই রাজনৈতিক মঞ্চে দলীয় প্রধান রাষ্ট্রীয় প্রধান নয়।
আমরা বাংলাদেশের রাজনীতিতে তৃণমুল থেকে রাষ্ট্রীয় প্রধান সহ যিনি দলের প্রধান তিনিই এলাকার প্রধান বা রাষ্ট্রের প্রধান হয়ে এসেছি। ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে রাষ্ট্রৃীয় প্রধান পদে যিনি দলীয় প্রধান তিনি হচ্ছেন এলাকার বা রাষ্ট্রের প্রধান। আমরা সাধারণ জনগণ সবাই কোনো না কোনো ভাবে একটি রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত, আমরাই আবার বিভিন্ন দলের সম্মেলন অথবা সমঝোতার মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করি। একজন নেতা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনাকে গণতন্ত্রের ভাষায় এড়াবৎসবহঃ ড়ভ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব নু ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব ভড়ৎ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব বিধিকে মেনে চলতে হয় । এ ভাষায় সেই নির্বাচিত ব্যক্তিকে প্রতিদ্বন্দিতা কারে জয় লাভের পর তিনিই হন ‘‘ কেউ আমার নয়, সবাই আমার ’’ এবং রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন বরাদ্দ, বন্টন জনগণের ভিতিত্তে বন্টন করতে হয় সেখানে দলীয় মন ও ইচ্ছা থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ করা সম্ভব হয়ে উঠে না। বাস্তবে দেখা যায় একজন এমপির এলাকা, একজন ইউপি চেয়ারম্যান এলাকা , একজন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের এলাকা বা অন্য কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধির এলাকার জনসংখার ভিত্তিতে বন্টন করা হয়। রাষ্ট্র কোন রাজনৈতিক দল পরিচালনা করছে এবং ঐ রাজনৈতিক দলের এমপি চেয়ারম্যানগণকে আলাদা করে তার এলাকায় বরাদ্দ, বন্টন করা হয় না। আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী। আমি বা আমার দলের সক্রিয় ভ‚মিকা দলে একটি মানুষকে এমপি অথবা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করি। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর রাষ্ট্রের বিধি বিধান মোতাবেক তিনি পরিচালিত হন। দলীয় নেতা কর্মীরা একজন নেতা নির্বাচিত বা নির্বাচিত প্রতিনিধি বানানোর পর ঐ নেতা কর্মীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ন্ত্রনে থাকে না তিনি থাকেন রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে।
অথচ বাস্তবে দেখা যায়, দলীয় সমর্থনে একজন ব্যক্তি নির্বাচিত হলে তার সুনাম ও বদনামের দায়ভার গ্রহণ করতে হয় সেই সব নেতা কর্মীদের। অথচ, আমার জানা মতে কোনো দলের গঠনতন্ত্রে উল্লেখ্য নেই যে, কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধি পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি দলীয় যেসব ইস্তেহার নির্বাচনের পূর্বে ঘোষিত ছিল, যে ঘোষনার কারণে দলীয় নেতা কর্মীরা প্রচার প্রচারণা চালিয়ে তাকে নির্বাচিত করেন এ সময়ের মধ্যে সেসব ইস্তেহারের কোনো কথাই মানা না হলে তার বিরুদ্ধে পাঁচ বছরের পূর্বে দলীয় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের বিধি বিধান নেই। কারণটি হচ্ছে, যিনি নির্বাচিত ওয়ার্ড সদস্য তিনিই আবার ঐ রাজনৈতিক দলের সভাপতি। যিনি ইউনিয়ন পরিষদের দলীয় মনোনয়নে ইউনিয়ন পরিষদ, চেয়ারম্যান তিনিই ঐ ইউনিয়নের রাজনৈতিক দলের সভাপতি। যিনি নির্বাচিত পৌর/সিটি মেয়র তিনারাই আবার ঐ পৌর/ সিটির ঐ রাজনৈতিক দলের দলীয় সভাপতি। যিনারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পান তিনারাই সেই দলের উপজেলার , জেলার, বিভাগীয় বা কেন্দ্রিয় কমিটির কোনো গুরুত্বরপূর্ণ পোষ্টের দখলে রয়েছেন। যিনি দলীয় প্রধান তিনিই আবার ঐ দল, সরকার গঠন করলে তিনি রাষ্ট্রী প্রধান হওয়ার দৃষ্টান্ত স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যাবধি হয়ে আসছে। রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবসায় রাষ্ট্রপতি সকল প্রকার ক্ষমতা সংরক্ষন করেন।
আমরা যারা দলীয় নির্বাচিত প্রতিনিধি নয় কিন্তু দলীয় কর্মী। আমাদের নেতা যখন নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকেন না তখন আমরা সেই নেতাকে আমাদের হাতের নাগালে পেয়ে থাকি কিন্তু যখন তিনারাই আবার নির্বাচিত প্রতিনিধি হন রাষ্ট্রের অধীনে চলে যান তখন তিনারা থাকেন আমাদের নাগালের বাইরে। ইচ্ছে অথবা দেখা করার প্রয়োজন থাকলেও রাষ্ট্রীয় রীতিনীতিকে ভেদ করে আমাদের নেতাদের কাছে পৌছানো সম্ভব হয়ে উঠে না। রাজনীতিতে একজন নির্বাচিত রাজনৈতিক নেতার নিয়ন্ত্রণে থাকে না রাজনৈতিক কর্মীদের । পাঁচ বছর এর মধ্য নেতা এবং কর্মীদের মধ্যে জবাব দীহিতা না থাকার কারণে একজন নির্বাচিত নেতা ইচ্ছা মতো রাষ্ট্র , এলাকা পরিচালনা করে। নির্বাচিত নেতা ও রাজনৈতিক কর্মীদের মাঝে জবাবদীহিতা ও সমঝোতা না থাকার কারণে নির্বাচিত প্রতিনিধি তার নির্বাচিত এলাকা ব্যক্তি ইচ্ছামতো পরিচালনা করেন।
যদি এমনটি হতো, একজন রাজনৈতিক নির্বাচিত কর্মী তার দলের কাছে জবাব দীহিতার বা পদচ্যুতি বিধিবিধান থাকতো তাহলে একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি ব্যক্তি ইচ্ছামতো রাষ্ট্র বা এলাকা পরিচালনা করতে বাধা গ্রস্থ হতো। আমি এটিও বলতে চাই তৃণমুল এলাকা, ওয়ার্ড এলাকা, ইউনিয়ন এলাকা, উপজেলা এলাকা, জেলা এলাকা, বিভাগীয় এলাকার প্রধান কার্য নির্বাহী এলাকায় একেকটি সম্মেলন এর মাধ্যমে ঐ দলের তৈরি কৃত গঠনতন্ত্রের মতে সংখ্যা বিশেষে কমিটি রয়েছে। সেই কমিটির যদি সভাপতি কোনা নির্বাচিত এলাকার নির্বাচিত নেতা হন বা দলীয় প্রধান যদি রাষ্ট্রীয প্রধান হন সেখানে দলীয় বিধি বিধান পাস করার জন্য সভাপতির প্রয়োজন, তিনিই যদি নির্বাচিত হন তাহলে জবাবদিহিতা কোথায় থাকবে বা নেবে এর জবাব। যদি রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্রে উল্লেখ থাকতো রাজনৈতিক দলের কোন নেতা নির্বাচিত প্রতিনিধি হলে দলের কাজে তার জবাব দিহিতা এমন থাকা উচিত ছিল যে, দলীয় কার্যকরি পরিষদের ঐ নির্বাচিত নেতার অপকর্মের জন্য দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। সেখানে কার্যকরী পরিষদের ১/৩ ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে নির্বাচিত পদ থেকে সরানো যেত। তাহলে একটি রাষ্ট্রের বা একটি দলের ভিতরে এত অনিয়ম দূর্নীতি বা স্বজনপ্রীতি থাকতো না। নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকতো সব সময় জবাব দিহীতার মধ্যে। এতে উন্নয়ন হতো এলাকার ও রাষ্ট্রের।