খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি\ সাধারন মানুষের ভোগান্তি দুর করতে দিনাজপুরের খানসামায় ইছামতি নদীর উপর একটি সেতুর নির্মান শুরুর প্রায় ৫বছর পার হলেও কাজ শেষ হয়নি আজও।তাই ওই অঞ্চলের মানুষ ভোগান্তি দুর করতে নির্মানাধীন সেতুর পাশ দিয়ে কাঠের সাকোঁ দিয়ে চলাচল করছে।
তবে এই কাঠের সাঁেকা দিয়ে মোটরসাইকেল, সাইকেল কিংবা ভ্যান ছাড়া আর কিছুই পার হতে পারে না। ফলে সাধারন কৃষক তাদের পন্য পরিবহন, রোগী নিয়ে বিপাকে পড়ে এবং বিকল্প পথে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যায়। এতে সময়-খরচ দুটোই বেশী হয় বলে স্থানীয়রা জানায়।
জানা যায়,দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামে ইছামতী নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল ২০১৮সালে। তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কাজও শুরু হয়। কিন্তু ২০২১ সালের জুন মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হয়নি। বরং বিভিন্ন অযুহাতে প্রায় দুইবছর সেতুর কাজ বন্ধ থাকে। এই সেতু নির্মানের অবহেলায় দীর্ঘ সময়েও সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে সেতুর স্থলে একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করেন গোয়ালডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন। এখনও ওই সাঁকো দিয়ে চলাচল করেন স্থানীয়রা।
খানসামা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানায়, ২০১৮সালের শুরুতে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০২০সালের জানুয়ারিতে নির্মাণকাজ শুরু করে স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী এম এহতেশামুল হক। পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ৬০মিটার দৈর্ঘ্যের আরসিসি গার্ডার সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ কোটি ৩৬ লাখ ২৮ হাজার ৯৯৬ টাকা। প্রায় ২বছর কাজ বন্ধের পর আবারও কাজ শুরু হয়েছে এবং আগামী ডিসেম্বর মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
রফিকুল ইসলামসহ স্থানীয় এলাকাবাসিরা জানান, সেতুর দুই পারে গোয়ালডিহি, নলবাড়ী, ডুমুলিয়া, পূর্ব হাসেমপুর, পশ্চিম হাসেমপুর গ্রামের ১০হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। এই রাস্তা ব্যবহার করেন উত্তরা ইপিজেডের কর্মী, তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা সেবাগ্রহীতারা। প্রতিদিন প্রায় ৫-৭হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। কৃষকেরা তাঁদের পণ্য নিয়ে খানসামাসহ নীলফামারী বাজারে যান এই রাস্তা দিয়ে। বর্ষার সময় শিশুদের স্কুলে যাতায়াতসহ সবার ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়।
গোয়ালডিহি ইউপির চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, সেতু নির্মাণে দেরি হওয়ায় এলাকার লোকজন ভোগান্তিতে পড়েন। প্রতিদিন মানুষের অভিযোগ শুনতে হয়। পরে গত বছরে ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে কাঠের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়েছে।তবে এর বিল এখনো পায়নি। আর সেতুর কাজ এখন আবারও শুরু হয়ে চলছে।
খানসামা উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ মোঃ ওবায়দুর রহমান জানান, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা বলে পাইলিং কাজ শেষের পর প্রায় ২বছর কাজ বন্ধ ছিল।তখন সেতুর কাজ দ্রæত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে লিখিতভাবে জানানো হয়।এরপর আবারও ঠিকাদার কাজ শুরু করেছেন। নতুনভাবে কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয় এবং আগামী ডিসেম্বর মাসে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে।