কাহারোল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : কাহারোলে লিচুর বাগানে সারিবদ্ধ মৌ-বক্স, মৌমাছির গুণগুণ শব্দে ওই এলাকা গুলো মূখরিত। দেখা গেছে, দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলায় এ মৌসুমে লিচুর বাগানগুলোর গাছগুলোতে এবার মুকুলে ভরে গেছে। তাই মুকুলের সমারোহে লিচু বাগানগুলোতে গতবারের চেয়ে বেড়ে গেছে মৌমাছিদের আনাগোণা। গতকাল শনিবার ( ৫এপ্রিল’২৫) সকাল ১০টার দিকে অত্র উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের নয়াবাদ ও মুকুন্দপুর গ্রামের লিচুর বাগান গুলোতে সারিবদ্ধ মৌ-বক্স বসিয়েছেন মৌ-খামারীরা। উপজেলা কৃষি বিভাগের সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় ২শত ৫০ জন লিচুর বাগান মালিক রয়েছে, লিচুর বাগানের সংখ্যাও ২শত ৫০টি। উপজেলায় ১শত ৪০ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান অবস্থিত। স্থানীয় উদ্যোক্তরাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মৌ-খামারিরা এই উপজেলায় এসে ভীড় জমাতে দেখা যাাচ্ছে। এর ফলে উদ্যোক্তা ও মৌ-খামারীরা এ মৌসুমে ৫০ মেট্রিক টন মধু আহরণের পাশা-পাশি মৌ-মাছি পরাগায়নের মাধ্যমে ৩০ ভাগ বেশি লিচু উৎপাদনের সম্ভবনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ধান চাষাবাদের উপজেলা কাহারোলেও লিচু বাগানগুলোতে সারিবদ্ধ মৌ-বক্স শোভা পাচ্ছে। মৌ-মাছির গুঞ্জন আর মৌ-খামারীদের কর্ম-ব্যস্ততায় এখন মুখরিত এ অঞ্চলের লিচু বাগানগুলো। মৌ-মাছি লিচুর মুকুলের মধু নিপুন ভাবে আহরণের পর বাক্সে ফিরছে, আবার বাক্সে মধু জমা রেখে মধু আহরণে ছুটছেও তারা। উত্তরাঞ্চলের সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের মুকুন্দপুর গ্রামে লিচুর বাগানে মৌ-খামার বসিয়েছেন আবুল কালাম নামে এক মৌ- খামারী। অন্য আরেকজন মৌ-খামারী মোঃ হাসনাত আলী ও তার লোকজন তাদের দলে রয়েছে ৮-১০ জন লোক। মৌ-খামারী মোঃ হাসনাত আলী জানান, তারা এবার ৪টি জায়গায় ৬ শতাধিক মৌ-বক্স বসিয়েছেন। মধু সংগ্রহের জন্য ইতিমধ্যে ৫টন মধু সংগ্রহ করেছেন। শুধু মোঃ হাসনাত আলী নয় কর্ম ব্যস্ত উদ্যোক্তা ও মৌ-খামারীরাও। ইতোমধ্যে প্রচুর মধু উৎপাদন করেছেন, বাকী সময়েও অনেক মধু আহরণের সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান তারা। উপজেলায় এ মৌসুমে ৩০ জনের অধিক মৌ-খামারী ও উদ্যোক্তা মধু আহরনে নেমেছে। তারা বেশির ভাগ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছে। দক্ষ মৌ-খামারীরা মধু আহরণের কাজ করছেন। এদিকে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মল্লিকা রানী সেহানবীশ জানান, অত্র উপজেলায় মাদ্রাজী,বেদানা, বোম্বাই,চায়না-৩, কাঠালিয়া সহ বিভিন্ন জাতের লিচুর উৎপাদন হয়ে থাকে এই উপজেলায়। বেদনা লিচু এলাকার চাহিদা মিটিয়ে এই সু-স্বাদু লিচুর খ্যাতি রয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। তিনি আরও জানান, বাগানে মধু আহরণে মৌ-মাছি পরাগায়নের মাধ্যমে লিচুর ফলন কমপক্ষে আরও ৩০ ভাগ বৃদ্ধির সম্ভবনা রয়েছে। লিচুর বাগানে মধু উৎপাদনে মৌ-খামারী ও লিচরু খামার মালিকদের নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা দিচ্ছে আমাদের কৃষি বিভাগ।