বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি\ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় প্রথমবার বিষমুক্ত আম চাষাবাদ শুরু হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে পার্টনার প্রকল্পের আওতায় এই চাষাবাদকে বলা হচ্ছে ‘উত্তম কৃষি চর্চা’ বা এঅচ (এড়ড়ফ অমৎরপঁষঃঁৎধষ চৎধপঃরপবং) পদ্ধতি।
বলা হচ্ছে, দেশে ১০টি সবজি এবং পাঁচটি ফল এই পদ্ধতি চাষাবাদ শুরু হয়েছে। বালিয়াডাঙ্গীতে আম চাষাবাদ দিয়ে যাত্রা শুরু করল এই পদ্ধতি। এর মাধ্যমে নিরাপদ, বিষমুক্ত ও রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন করা যাবে। এর ফলে চাষিদের জন্য লাভজনক এবং দেশের বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি করতে সক্ষম হবে।
জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক আবু বেলাল প্রথমবার এই পদ্ধতি অনুসরণ করে এক একর জমিতে বানানা ম্যাঙ্গো ও আম্রপালি দুই জাতের আমগাছ চাষাবাদ করছেন। উত্তম কৃষি চর্চা পদ্ধতি হিসেবে তার বাগানে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ, ফল ব্যাগিং, নিরাপদ বালাইনাশক ব্যবহার এবং বাগানের চারপাশে নেট দিয়ে ঘেরাও করেছেন। এই অত্যাধুনিক পদ্ধতি অনুসরণের ফলে আম চাষাবাদে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। ফলে বিষমুক্ত আম চাষাবাদ সহজ হয়ে উঠছে।
কৃষক আবু বেলাল বলেন, ‘প্রথমবার বিষমুক্ত আম চাষাবাদ করছি। কৃষি কার্যালয় থেকে প্রশিক্ষণ, কারিগরি সহায়তা, পরামর্শ সবই পাচ্ছি। এর আগের আমগুলোতে প্রচুর স্প্রে করতে হতো। এবার বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণের কারণে এসবের প্রয়োজন হচ্ছে না। ভালো লাগছে। উৎপাদিত আম প্রথম পরিবারকে খাওয়াব। পরে বাজারে তুলব।’
বেলালের উত্তম কৃষি চর্চা পদ্ধতি দেখছেন স্থানীয় আমচাষিরা। এবার শেষ পর্যন্ত ফলাফল ভালো এবং আশানুরূপ লাভ হলে আগামীতে অনেক চাষি এই পদ্ধতি অনুসরণে আগ্রহী তাঁরা।
উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন সোহেল বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষিকে টেকসই ও লাভজনক করে তোলা আমাদের লক্ষ্য। উত্তম কৃষি চর্চা পদ্ধতি আন্তর্জাতিক মানের কৃষি প্রযুক্তি। যা কৃষকদের উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করবে এবং দেশে বিষমুক্ত ফল ও সবজি উৎপাদন নিশ্চিত করবে। বালিয়াডাঙ্গীতে শুরু করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত এবং অনেক আশাবাদী। ভালো কিছু হতে চলেছে কৃষিতে।’
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, ‘বাজারে স্প্রেমুক্ত আম পাওয়া কঠিন। উত্তম কৃষিচর্চা পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে পারলে নিরাপদ খাদ্য সহজেই মিলবে। উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ এটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে আশা করা যায় ভালো কিছু হবে।