পঞ্চগড় প্রতিনিধি\পঞ্চগড়ে ছাত্রদল কর্মীর ছুরিকাঘাতে জাবেদ ওমর জয় (১৯) নামে এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছে। গত বুধবার রাতে পঞ্চগড় জেলা শহরের সিনেমা হল মার্কেটের সামনে এই ঘটনা ঘটে। নিহত জয় পঞ্চগড় জেলা শহরের পুরাতন ক্যাম্প এলাকার জহিরুল হকের ছেলে। তিনি ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার কলেজিয়েট ইন্সটিটিউট থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। জয় পঞ্চগড় পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সদস্য বলে জানা গেছে। এছাড়া শহরের কদমতলা এলাকায় সূচনা ফল ঘরে ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ জানায়, পূর্ব শত্রæতার জের ধরে ছাত্রদলের কর্মী জাবেদ ওমর জয়ের গ্রæপের সাথে শহরের নতুনবস্তি এলাকার ছাত্রদলের আরেক কর্মী ফারাজ ইসলাম আল আমিন গ্রæপের মধ্যে বুধবার দুপুর থেকে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। রাতে জয় একাই জেলা শহরের সিনেমা হল মার্কেটের সামনে গেলে সেখানে প্রতিপক্ষের ১০/১২ জনের সাথে আবারো বাক বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে ফারাজ ইসলাম আল আমিন ছুরিকাঘাত করে জয়ের পেটে। এতে তার ভুড়ির কিছু অংশ বের হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পরে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়কে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ছাত্রদল কর্মী জয় হত্যার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা শহরের শেরে বাংলা পার্ক চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে। এই সময় শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা হত্যাকারীদের দ্রæত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ¯েøাগান দেন। তারা প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে জানান, দাবি না মানা হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শইমী ইমতিয়াজ, ওসি আব্দুল্লা হিল জামানসহ পুলিশের একটি টিম। তারা শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে জানান, ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে (ঝুনু নামে) ইতোমধ্যে আটক করা হয়েছে। এরপর শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যান।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাÐের ঘটনায় এখনও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পরই অভিযান চালিয়ে একজনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সি বলেন, মূল আসামি এখনও পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও নিয়োজিত রয়েছে। জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।