পীরগঞ্জ প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে এক গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগের পর আতঙ্কে দিন পার করছেন এক সংখ্যালঘু পরিবার। গ্রাম পুলিশ কাইয়ুম আলীর ভয়ে নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় রাত কাটাচ্ছেন তাঁরা। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ভামদা গ্রামের কাইয়ুম আলী নামে এক গ্রাম পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার ২৩ বছর বয়সী এক হিন্দু গৃহবধূকে শারিরীক সম্পর্কের জন্য কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। প্রস্তাবে রাজি না হলে ওই গৃহবধূর ক্ষতি করবেন বলে হুমকিও দেন গ্রাম পুলিশ কাইয়ুম। গত ৭ অক্টোবর রাত ১১ টার দিকে ওই হিন্দু গৃহবধূর স্বামীর অনুপস্থিতি টের পেয়ে সুকৌশলে তাঁর শয়ন ঘরের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন গ্রাম পুলিশ কাইয়ুম আলী। এরপর তিনি ওই ঘুমন্ত গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। টের পেয়ে ওই গৃহবধূ চিৎকার-চেচামেচি করতে থাকলে কাইয়ুম আলী ঘর থেকে বেরিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যান। এঘটনার বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ওই গৃহবধূ।
থানায় লিখিত অভিযোগের পর থেকেই গ্রাম পুলিশ কাইয়ুম আলী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নানা হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ওই হিন্দু পরিবারটির। তাদের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে দিনে বাড়িতে থাকলেও প্রাণভয়ে রাতে অন্য জায়গায় রাত্রিযাপন করছেন ভুক্তভোগী হিন্দু পরিবারটি। ঘটনার ৬ দিন পার হলেও বিচার না পেয়ে আতঙ্কে আছেন তাঁরা।
ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী বলেন, ‘গত ৭ অক্টোবর রাত ১০ টার পর আমি বাড়ির পাশে দোকানে যাই। আমার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে গ্রাম পুলিশ কাইয়ুম এ ঘটনা ঘটায়। আমরা এখানে দুইটি মাত্র হিন্দু পরিবার বসবাস করি। গ্রাম পুলিশ কাইয়ুমের ভয়ে বাড়িতেও থাকতে পারছি না। ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই।’
স্থানীয়রা জানান, কাইয়ুম আলী এর আগেও গ্রাম পুলিশের পোশাক পরিধান করে রাতের আধাঁরে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার এ ধরনের ঘটনার চেষ্টা চালিয়েছেন। তাঁর অত্যাচারে এলাকাও ছেড়েছেন এক হিন্দু পরিবার। স্থানীয়দের অভিযোগ, গ্রাম পুলিশের প্রভাব দেখিয়ে এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন কাইয়ুম আলী। ভয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতেও চায় না।
ধর্ষণ চেষ্টার বিষয়টি মিথ্যা দাবি করে গ্রাম পুলিশ কাইয়ুম আলী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে স্থানীয়রা মিথ্যা ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এধরনের কোন কাজে আমি জড়িত না।’
বিষয়টি স্থানীয় ভাবে ইউনিয়ন পরিষদে মীমাংসার জন্য বসা হলে কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানান কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা আলম। তিনি বলেন, ‘গ্রাম পুলিশ কাইয়ুম তাঁর অপরাধের কথা স্বীকার না করায় বিষয়টির সমাধান হয়নি।’
পীরগঞ্জ থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এধরনের ঘটনার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।