তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
তেঁতুলিয়ায় আবারও সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের সর্বনি¤œ। গত বুধবার ছিল ৯.৫ ডিগ্রি ও মঙ্গলবার ৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে গত ৩১ জানুয়ারিতে সর্বনি¤œ ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। তবে তিন দিন ধরে তাপমাত্রা বাড়ায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। সকালে তেমন শীত না থাকায় ভ্যান চালক, পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, দিনমজুর ও নি¤œ আয়ের মানুষগুলোকে কাজে যেতে দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার সরদার পাড়া এলাকার মহানন্দা পাথর শ্রমিক আনারুল ইসলাম, রফিকুল, রিয়াজুল ও মমতাজুল জানান, নদীর পানি ঠান্ডা হলেও দুদিন ধরে তাপমাত্রা বাড়ায় শীত কমেছে। এই নদীতে পাথর তুলেই পরিবারের মুখে খাবার জোগার করতে হয়। গত বুধবার থেকেই সকাল সকাল কাজে বের হতে পারছি, নদীতে নেমে পাথর তুলতে পারছি।
সকালে অটোরিকসা যোগে যাওয়ার সময় কথা হয় আয়শা, কমলা বেগম ও শহর বানুসহ কয়েকজন নারী শ্রমিকের সাথে। তারা সরদারপাড়া, কাশিমগঞ্জ ও বাংলাবান্ধায় কাজে যাচ্ছিলেন। তারা জানান, কয়েকদিন কনকনে শীত থাকার পর কাল থেকেই ঠান্ডা কম মনে হচ্ছে। তাই ভোরে বাড়ির রান্না-বান্না সেরে কাজে বের হতে পেরেছি।
তিরনইহাট ও রনচন্ডী এলাকার কয়েকজন বোরো চাষী জানান, গত কয়েকদিনের তুলনায় আজ ঠান্ডা কম। ভোর থেকেই ক্ষেতে সার দিতে এসেছি। পরিচর্যার কাজ করতে পারছি। সকাল সকাল কাজ করলে দিনের অনেক কাজ হয়ে যায়।
তবে শীতের কারণে শীতজনিত নানান ব্যাধি বেড়েছে। ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি-কাঁশির প্রকোপ দেখা গেছে। এছাড়া হাসপাতাল, ক্লিনিক-গুলোতে অ্যাজমা, সাইনোসাইটিস, ইসনোফিলসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। চিকিৎসকরা রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দিচ্ছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, তিনদিন ধরে তাপমাত্রা উঠানামা করছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা কমে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বুধবার ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি ও মঙ্গলবার ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। দেশের অন্যান্য জায়গায় তাপমাত্রা বাড়লেও তেঁতুলিয়ায় বৃহস্পতিবার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। বরফের পাহাড় হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা এ অঞ্চলের সন্নিকটে হওয়ায় উত্তরীয় ও পুবালী বাতাসের কারণে এ এলাকায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। আগামী কয়েকদিন এরকমই তাপমাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।