পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি ঃ ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে কোরবানীর পশুর হাটে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জারি করা গনবিজ্ঞপ্তির নির্দেশনা কোন ভাবেই মানা হচ্ছে না। মাস্ক ছাড়াই গাদা গাদি করে বেচা-কেনা করা হচ্ছে গরু-ছাগল। গনবিজ্ঞপ্তির নির্দেশনা মানাতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কোন উদ্যোগ নেই। এতে মারাতœক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন হাটে কোরবানীর পশু কিনতে আসা হাজার হাজার মানুষ।
সম্প্রতি দেশে করোনা পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়ার কারণে পশুর হাট এবং কোরবানী কালিন সময়ে স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করতে গন বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এতে বলা হয়, খোলা জায়গায় পশুর হাট বসাতে হবে। মাস্ক ছাড়া পশুর হাটে প্রবেশ করা যাবে না। ইজারাদার কর্তৃক হাট বসানোর আগে মহামারি রোধে মাস্ক, সাবান, জিবানুমুক্তকরণ সামগ্রী সরবরাহ করা সহ সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। পশুর হাটে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার পথ নিদ্দিষ্ট করতে হবে। একটি পশু থেকে আরেকটি পশু তিন ফুট দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। টোল আদায় কাউন্টার বাড়াতে হবে এবং লাইনে তিন ফুট দুরত্বে দাঁড়িয়ে টোল গ্রহনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি হাটে পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক একাধিক ভ্রাম্যমান স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল টিম গঠন করে স্বাস্থ্য সেবা দিতে হবে। পর্যাপ্ত পানি ও বিøচিং পাউডার দিয়ে পশুর বজ্য দ্রæত পরিস্কার করতে হবে। কিন্তু এসব নির্দেশনা মানা হচ্ছে না পীরগঞ্জের কোন পশুর হাটেই। পৌর সভা সহ পীরগঞ্জ উপজেলায় ৩টি পশুর হাট রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার সেনগাও ইউনিয়নে নসিবগঞ্জ এবং জাবরহাট ইউনিয়নে জাবরহাট স্থায়ী পশুর হাট। কোরবানী উপলক্ষে পৌরসভার কলেজ হাটে অস্থায়ী ভাবে পশুর হাট বসানো হয়েছে। সপ্তাহের বুধবার জাবরহাট, বৃহস্পতিবার নসিবগঞ্জ হাট এবং রবি, বুধবার ও শুক্রবার কলেজ হাটে গরু-ছাগলের অস্থায়ী হাট বসানো হয়েছে। হাটগুলির মধ্যে নসিবগঞ্জ ও জাবরহাটই প্রধান পশুর হাট। খোলা জায়গায় পশুর হাট বসানোর কথা বলা হলেও এ উপজেলায় হাটের মধ্যেই পশুর হাট বসানো হয়েছে। এতে ভীড় বাড়ছে হাটগুলিতে।
বুধবার পৌরসভার কলেজ হাট এবং জাবরহাটে দেখা যায়, হাটে কোন ভাবেই স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না। মাস্ক ছাড়াই গাদা গাদি করে অবস্থান করছেন হাজার হাজার মানুষ। প্রচন্ড ভীড়ের মধ্যে বেচা-কেনা করা হচ্ছে গরু-ছাগল। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই। কোন ভাবেই সরবরাহ করা হচ্ছে না মাস্ক। গাদা গাদি করে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে সারি সারি গরু-ছাগল। পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের কোন স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল টিম নাই। টোল আদায়ে লাইনের কোন ব্যবস্থা নেই। প্রচন্ড ভীড় উপেক্ষা করে গরু-ছাগল কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। কলেজ হাটে গরু কিনতে আসা নসরতে খোদা নামে এক ব্যক্তি জানান, কোন ভাবেই স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না হাটে। মাস্ক পড়ার কোন বালাই নেই। হাটের ইজারাদার বা পৌরসভার সেদিকে কোন খেয়াল নেই। তারা শুধু টোল আদায়ে ব্যস্ত। জাবরহাটের আরেক গরু ক্রেতা রহমান আলী জানান, কোরবানীর আর বেশী দিন বাকি নাই। জাবরহাটে এটাই কোরবানির শেষ হাট। তাই মানুষ গরু-ছাগল কিনতে হাটে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। গরু-ছাগল কেনা-বেচা নিয়ে ব্যস্ত সবাই। স্বাস্থ্য বিধি মানার সময় কোথায় ?
এ বিষয়ে জাবরহাট ইজারাদারের শরিক মোস্তান জানান, হাটে হাজার হাজার লোক আসে। কে কাকে স্বাস্থ্য বিধি মানাবে। সাবাই ব্যস্ত। কাজেই এখানে স্বাস্থ্য বিধি মানা বা মানানো সম্ভব হচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি।
জাবরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, এ বিষয়ে তারা কোন নির্দেশনা পাননি।
পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম জানান, বিষয়টি সবার জানা থাকার কথা। তার পরেও পশুর হাটে কেন স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না। এটা দেখা হবে।