দিনাজপুরে চালের বাজারে দাম কমার লক্ষন দেখা না গেলেও বাড়ার প্রবনতায় নি¤œ ও মধ্যবিত্তরা পড়েছে বিপাকে। এখন বাজারে ধানের সরবরাহ কম এবং অন্যদিকে ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে আমদানীকারকদের আগ্রহ কম। আবার আমদানী হলেও বাজারে এর প্রভাব পড়ছে না।
অপরদিকে জ্বালানী তেলের মুল্য বৃদ্ধিতে পরিবহনসহ সকল ক্ষেত্রেই প্রভাব পড়েছে। ফলে কৃষি প্রধান জেলা হয়েও চালের বাজার অস্থির।এতে চালের মুল্য খুচরা বাজারে কেজী প্রতি প্রকার ভেদে ২-৪টাকা বেড়েছে। ফলে বস্তা প্রতি ১০০- ২০০টাকা বেড়েছে।
বাজারে যে ধান পাওয়া যাচ্ছে, তা বিগত মৌসুমের ধান। তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। আবার বাজারে ধানের সরবরাহও কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। বর্তমানে কৃষকের কাছে ধান না থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ও মজুতদারেরা।
ক্রেতারা বলছেন, এসময়ে বাজার মনিটরিং জোরদার করা উচিত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে ধানের সরবরাহ কম এবং দাম বাড়লে চালের দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।
ভারত থেকে আমদানির পরও দিনাজপুরের হিলিতে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি চালের দাম বেড়েছে ৩ থেকে ৪ টাকা। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষরা।
রোববার সকালে হিলি বাজারে দেখা গেছে, ২৮ জাতের চাল কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে ৪৮ টাকা, ৫২ টাকার মিনিকেট ৪ টাকা বেড়ে ৬৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে স্বর্ণা-৫ জাতের চালও কেজিতে ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
চাল ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ভারত থেকে যে চাল আসছে সেই চালের বিপরীতে ডলারের মূল্যে শুল্ক দিয়ে আমদানিতে প্রায় ৫৯ টাকা কেজি পড়ে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশি চালের দাম ৪৭ থেকে ৪৯ টাকা। বেশি মূল্যের চাল আমদানি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা অনেক লোকসান গুনছেন। ফলে দামে প্রভাব পড়ছে।’
গত কয়েকদিনে চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৩-৪ টাকা। খুচরা বাজারে আরও ১-২ টাকা বেড়েছে।
ভ্যানচালক আবেদ আলী বলেন, ছেলে মেয়েসহ পাঁচজনের সংসার আমার। প্রতিদিন গড়ে তিন কেজি চাল প্রয়োজন হয়। তরিতরকারি নিয়ে সংসারে প্রতিদিন ৫০০টাকার খরচ প্রয়োজন। ভ্যান চালিয়ে দিনে ৪০০-৫০০ টাকা আয় হয়। এতে কোনোমতে সংসার চললেও মাস শেষে দেনার মধ্যে পড়ে যায়। এভাবে ব্যয় বাড়ে কিন্তু আমাদের আয় বাড়ে না।
দিনাজপুর চালকল মালিক গ্রæপের সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন জানান, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সাথে সাথে ধানের দাম বাড়তে শুরু করে। বাজারে ধানের সরবরাহও কমে গেছে। অন্যদিকে ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চাল আমদানীতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। আবার কেউ আমদানী করলেও দাম বেশী হওয়ায় বাজারে দাম কমাতে প্রভাব পড়ছে না। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে এখনি খোলা বাজারে চাল বিক্রি শুরু করা দরকার এবং বাজার মনিটরিংও জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, খুচরা পর্যায়ে চালে প্রকারভেদে বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে একশ থেকে ২০০টাকা। কিন্তু মিল পর্যায়ে তেমন বাড়েনি বলে জানান তিনি।