আটোয়ারী(পঞ্চগড়) প্রতিনিধি ঃ পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আয়ুব আলী কর্তৃক সহকারী মৌলভী শিক্ষক মোঃ মোস্তফা কামাল দীর্ঘদিন থেকে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা জানান, প্রধান শিক্ষক আয়ুব আলী ক্ষমতার অপব্যবহার করে মৌলভী শিক্ষককে কারণে অকারণে শোকজ, অযৌক্তিক হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত দেখিয়ে বেতন কর্তন করেছেন। শেষ পর্যন্ত মৌলভী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তও করেছেন। বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দফায় দফায় প্রধান শিক্ষকের নিকট আলোচনায় বসেছেন। তিনি প্রত্যাহারের আশ^াসও দিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ ২৭ ঁজুলাই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়। অভিভাবক , শিক্ষার্থীরা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রধান শিক্ষকের প্রতারণামুলক আচরণে ক্ষিপ্ত হয়ে মৌলভী শিক্ষকের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার সহ প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবীতে ৩ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে আটোয়ারী- বোদা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এমন সময় পুলিশ খবর পেয়ে আটোয়ারী থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই দিপেন্দ্র নাথ সিংহ একদল পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয়। তিনি বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে আসেন। এসময় প্রধান শিক্ষক লাঞ্চিত হয়। পরিস্থিতি শান্ত হলে পুলিশ, সাংবাদিক ও অভিভাবকরা বিদ্যালয় ত্যাগ করে। ততক্ষনে মৌলভী শিক্ষককে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র প্রধান শিক্ষকের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। তিনি কৌশল অবলম্বন করে বিদ্যালয়ের পিয়ন দেলোয়ার হোসেনকে সন্ধা ৬টার দিকে আটোয়ারী হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। পিয়ন দেলোয়ার পরদিন সকালে হাসপাতাল ত্যাগ করে বাড়ি চলে যান। আর রাত প্রায় ৮টার দিকে প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে রক্ষিত শিক্ষার্থীদের অর্জিত পুরস্কার সমুহ (ট্রফি) তারই নির্দেশে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুকুল চন্দ্র রায় ও অফিস সহকারী দেলোয়ার হোসেন ভেঙ্গে দিয়ে সাংবাদিক ডেকে এনে ছবি তোলেন। ওই সাংবাদিক অন্য এক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকও বটে। সেই আদর্শবান শিক্ষক ও সাংবাদিক তার চোখের সামনে ঘটানো এতবড় অন্যায়টাকে বুকে চেপে ধরে রাখতে পারেননি। ফাঁস হয়ে যায় মৌলভী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিনব কৌশল। এদিকে শিক্ষার্থীরা তাদের অর্জিত ট্রফি ভেঙ্গে ফেলার প্রতিবাদে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ দিয়েছেন। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মুসফিকুল আলম হালিম বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অর্জিত ট্রফি ভাঙ্গার অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্তের জন্য আইসিটি অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আইসিটি অফিসার মোঃ সহিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের কপি সবেমাত্র হাতে পেয়েছি। দ্রæত তদন্ত করে প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে প্রেরন করা হবে।