দিনাজপুর প্রতিনিধি \
বাল্যবিবাহকে ‘না’ জানালো দিনাজপুর সদর উপজেলার নশিপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজের সাত শতাধিক শিক্ষার্থী। বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে জানতে পেরে শুধু নিজেদের ক্ষেত্রে নয়, নিজ এলাকাতেও যাতে কোন বাল্যবিবাহ সংঘটিত না হতে পারে সে জন্য দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে এসব শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার নশিপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গনে ‘মাদক, বাল্যবিবাহ ও আত্মহত্যা প্রতিরোধে আইনশৃংখলা বিষয়ক’ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই প্রত্যয় ব্যক্ত করে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা।
নশিপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, দিনাজপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন সরকার।
কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মোঃ রাজেদুর রহমান রাজুর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কোতয়ালী থানার ওসি মোঃ তানভিরুল ইসলাম, পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ গোলাম মওলা শাহ, উপ-পরিদর্শক মোঃ শামীম হক ও সুন্দরবন ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল লতিফ প্রমুখ।
সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, নশিপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সহকারী অধ্যাপক প্রভাস চন্দ্র রায়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিনাজপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন সরকার বলেন, করোনাকালীন সময়ে বাল্য বিবাহের প্রবণতা অনেকে বেড়ে যায়। এতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং এসব প্রতিরোধ করতে হবে। তিনি মাদক, বাল্যবিবাহ ও আত্মহত্যা প্রতিরোধে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বাল্যবিবাহসহ যে কোন নির্যাতনের তথ্য জানাতে সরাসরি পুলিশ বিভাগে অথবা ৯৯৯-এ ফোন করার আহŸান জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির সাথে সমস্বরে বাল্যবিবাহকে একসাথে ‘না’ বলেন উপস্থিত ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী।
প্রায় দিনভর অনুষ্ঠান শেষে একাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থী রাশেদা আক্তার জানান, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা আজ বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে পুংখানুপুঙ্খ অবগত হলাম। এখন থেকে শুধু নিজেদের ক্ষেত্রে নয়, এলাকার যে কোন বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সোচ্চার ভূমিকা পালনের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এই শিক্ষার্থী।
একই শ্রেনীর শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার খুশী বলেন, আমাদের এলাকায় কয়েকজনের বাল্য বিবাহ হয়েছে। এর কুফল সম্পর্কে কিছুটা হলেও অবগত হয়েছি। কিন্তু আমরাও যে এই বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করতে পারি-সে সম্পর্কে কোন ধারনা ছিলো না বা সাহস ছিলো না। আজকে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হলাম এবং সাহস পেলাম যে আমরাও প্রতিরোধ করতে পারি এই বাল্যবিবাহ। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে এখন থেকে কঠোর অবস্থানের কথা জানান শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার খুশী।