বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি\ রং নাম্বারে পরিচয়ের পর প্রেমিককে বিয়ের করার আশায় পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় এসে নারায়নগঞ্জের এক তরুনী (২১) গণধর্ষনের শিকার হয়েছে। পরে গত শনিবর (১০ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে ওই তরুনী পঞ্চগড়ের বোদা থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে চারজনের নামে মামলা দায়ের করেন। আসামিরা হলেন উপজেলার সিপাইপাড়া গ্রামের মহিদুলের ছেলে প্রেমিক আব্দুল মালেক (২৫), তার বন্ধু প্রসাদ খাওয়া গ্রামের রহিদুলের ছেলে মো. আপন (২৫), মালেকের আরেক বন্ধু একই এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (৩০), মালেকের সহযোগী বামনপাড়া গ্রামের সামসুদ্দিনের ছেলে আলমগীর হোসেন (২২)। শুক্রবার (০৯ সেপ্টেম্বর) রাতে এই ধর্ষনের ঘটনা ঘটে। মামলার পর বোদা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামী আব্দুল মালেক ও তার সহযোগী আলমগীরকে গ্রেফতার করেছেন। পরে রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) আটক কৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়। তবে গণধর্ষনের ঘটনাটি সোমবার সকালে প্রকাশ পায়। মামলার এজাহার ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়.আব্দুল মালেক (২৫) নামে এক যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয় নারায়নগঞ্জ জেলার এক তরুনীর। প্রায় দেড় বছর দুজনের মধ্যে মোবাইল ফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্পর্ক চলছিল। এক পর্যায়ে প্রেমিক মালেক ওই তরুনীকে বিবাহের প্রস্তাব দেন এবং পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় আসতে বলেন। পরে তরুনী মালেকের কথায় রাজী হয়ে বিয়ে করার জন্য নারায়নগঞ্জ থেকে বাসযোগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বোদা উপজেলায় আসেন। বোদা বাসস্ট্যন্ডে এসে মালেকের সাথে সাক্ষাত হয়। আলমগীর হোসেনের ইজিবাইকে মালেক সহ উপজেলার বোদা সদর ইউনিয়নের প্রসাদখাওয়া গ্রামে বাচ্চু মিঞার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বাচ্চু মিঞার বাড়িতে কোন লোকজন না থাকায় ওই তরুনী কিছুটা ভয় পেয়ে বুঝতে পারে অসৎ উদ্দেশ্যে আছে। এ সময় আপন ও আশরাফুল নামে মালেকের দুজন বন্ধু হিসেবে পরিচয় করে দেয় তরুনীর সাথে। প্রেমিক মালেক সহ তিনজনই তরুনীর সাথে কথা বলতে শুরু করেন। পরে মালেক বিয়ে করার উদ্দেশ্যে কাজী অফিসে যাওয়ার জন্য বাচ্চু মিঞার বাড়ির পাশে আমবাগানে নিয়ে যায়, সেখানে মালেক শারীরিক মেলামেশার প্রস্তাব দেয় ওই তরুনীকে। কিন্তু প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় সেখানে আপন ও আশরাফুল ইসলাম ওই তরুনীর মুখ চেপে ধরে প্রথমে মালেক জোরপূর্বক ধর্ষন করেন। পরে পালাক্রমে আপন ও আশরাফুল রাত নয়টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত ধর্ষন করে। অপরদিকে আলমগীর সহ আরও দুই থেকে তিনজন ঘটনাস্থলে তাদের পাহারা দেয়। এ সময় তরুনীর চিৎকারে স্থানীয় এলকাবাসীরা টর্চ লাইট নিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে শুরু করলে মালেক ও তার সহযোগীরা ওই তরুনীকে আমবাগানে রেখে পালিয়ে যায়। বোদা থানার ওসি সুজয় কুমার রায় জানান এই ঘটনায় পুলিশ প্রধান আসামী মালেক ও তার সহযোগী আলমগীরকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ধর্ষিত তরুনীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে এবং আদালতে ভিকটিমের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। অন্য আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।