দিনাজপুরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী রোজোয়ান সাদ্দামের (২৬) মৃত্যুদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে রায় দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক।
গতকাল বুধবার বিকাল ৩টায় এই রায় দেন দিনাজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শরিফ উদ্দিন আহমেদ। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত সাদ্দাম দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার হরিপুর সোনামুড়ি গ্রামের হারুন-উর রশিদের ছেলে। তার স্ত্রী নিহত লায়লা খাতুন একই উপজেলার খটখটিয়া কৃষ্ণপুর গ্রামের মোহাম্মদ সাবজান মিয়ার মেয়ে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তৈয়বা বেগম বলেন, স্ত্রী হত্যার দায়ে আসামি সাদ্দামকে মৃত্যুদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। এই ঘটনায় সর্বোচ্চ রায় প্রদান দিয়েছেন আদালত। এই রায় যেন দ্রæতই কার্যকর করা হয় এটাই প্রত্যাশা করবো। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে লায়লা ও সাদ্দামের বিয়ে হয়। এই সময় বিয়েতে যৌতুক বাবদ ৫০ হাজার টাকা দেন লায়লার পরিবার। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই সাদ্দাম আর টাকার জন্য স্ত্রীকে মারধর করে। ২০১৬ সালের ১০ জুলাই স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি যান লায়লা। পুনরায় ৮০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে স্বামী। যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে রেখেই চলে আসে। পরে স্থানীয়দের মীমাংসায় ওই বছরের ২৩ জুলাই স্ত্রীকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায় স্বামী। ২৫ জুলাই লায়লার বাবা সাবজান মিয়া জানতে পারেন, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পর দিন নবাবগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এই মামলায় স্বামী রোজোয়ান সাদ্দাম ও তার বাবা-মা, ভাই-ভাবিসহ মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আহাসানুর রহমান অন্যান্য আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে স্বামীকে প্রধান আসামি করে অভিযোগপত্র দেন।
মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে বিচারক শরীফ উদ্দিন আহমেদ আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে রায় দেন।