দেশে প্রতিনিয়ত পিঁয়াজের চাহিদা, ঘাটতি মেটাতে ও উৎপাদন বাড়াতে অসময়ে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজের চারা উৎপাদন করে বাজার অস্থিরতা রোধ এবং পিয়াজ চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হচ্ছে। অসময়ে গ্রীষ্মকালিন পিঁয়াজ চাষে লাভবান হওয়ার কারণে চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকের মাঝে।
কৃষি মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনায় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহায়তা ও পরামর্শে এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষ করছেন কৃষক। অধিক তাপমাত্রা ও অতি বৃষ্টিতে পলিথিন শেড ব্যবহার করে স্বল্প সেচে স্বল্প ব্যয়ে স্বল্প সময়ে মসলা জাতীয় এই পিঁয়াজের জাতটি সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই কৃষক বাজারজাত করে লাভবান হতে পারেন। এই পিয়াঁজ চাষে রোগবালাই, পোকা-মাকড় নেই বললেই চলে।
এই গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজের জাতটি আগাম জাতের খরিপ মৌসুমে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) চাষ হয়। শীতের শুরুতে অধিক মূল্যে বাজরজাত করা যায়। সাধারনত: বাংলাদেশের কৃষক নভেম্বর হতে ডিসেম্বরের মধ্যেই বারি উদ্ভাবিত শীতকালীন দেশী জাতের পিঁয়াজ আবাদ করে থাকেন। কিন্তু পিঁয়াজের অপ্রচলিত গ্রীস্মকালীন মৌসুমে এন-৫৩ জাতটি সরকার কর্তৃক বিএডিসির মাধ্যমে আমদানী করে দেশে ভোক্তাগণের চাহিদা পুরণে মাঠ পর্যায়ে গত বছর হতে কৃষি প্রনোদনা কর্মসূচির আওতায় চাষ হয়ে আসছে। এ জাতের পিঁয়াজের রং লালচে, বৃষ্টিতে এ জাতের পিঁয়াজের কন্দ দ্রæত বৃদ্ধি পায়। আকারে প্রত্যেকটি পিঁয়াজের ওজন ১০০-২০০ গ্রাম।এ জাতটি মুনাফা ভিত্তিক অর্থকরী ফসল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
পাতাসহ পিঁয়াজ দিনাজপুরের বাহাদুর বাজার, চক বাজার, সদর উপজেলার রানীগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, রামডুবিহাট, ঝানজিরা ও কৃষান বাজার, খোশালপুর ফার্মহাট এবং ঢাকার কারওয়ান বাজারে সাধারণ সবজি ব্যবসায়ীগণ ট্রাকে লোড দিয়ে অন্যান্য সবজির সংগে এ গুলো বিক্রি করছেন।
দিনাজপুর সদরের ফাজিলপুর ইউনিয়নের কৃষক মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, পাতাসহ পিঁয়াজ ৮০ হতে ১০০টাকা কেজি দরে বিক্রয় করে লাভবান হচ্ছেন।
দিনাজপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ নুর হাসান জানান, গত বছর হতে কৃষি প্রনোদনা কর্মসূচির আওতায় দিনাজপুর সদরের ১০টি ইউপির কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিয়ে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষে উৎসাহিত করা হয়। এবছর ২০২২-২৩সালে ২০০জন কৃষককে এ সহায়তা দেয়া হয়েছে। লাগসই কৃষি প্রযুক্তি, দক্ষ ব্যবস্থাপনা, আধুনিক কলাকৌশল ও প্রশিক্ষণ প্রয়োগে অসময়ে বাম্পার উৎপাদন এবং মূল্য বেশী পাওয়ায় এর উৎপাদন উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ার উজ্জল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানান।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ড.এ.এস.এম. সাইফুল ইসলাম জানান, মৌসুমের শুরুতে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজের গুনগতমানের বীজ সরবরাহ, পলিথিন শেডে চারা উৎপাদন ও বেডে রোপন করলে গ্রীস্ম ও বর্ষাকালে এ পিঁয়াজ চাষ করে কৃষকগণ অধিক মুনাফা পাবেন এবং পিঁয়াজের চাহিদা অনেকাংশে মিটানো সম্ভব হবে।