পঞ্চগড় প্রতিনিধি\ নাম তার চান মিয়া। সবাই ডাকেন চান ফকির বলে। বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নে চানপাড়া গ্রামে। বিভিন্ন সময়ে তিনি সংবাদের শিরোনাম হয়েছিলেন তার বয়সের কারণে। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ০১ জানুয়ারি ১৮৭৯। সে অনুযায়ী মৃত্যুকালীন সময়ে তার বয়স হয়েছিল ১৪৩ বছর ১০ মাস ১৩ দিন। জাতীয় পরিচয়পত্রে তার বয়স ঠিক দেয়া থাকলে পঞ্চগড় জেলাতো বটেই দেশের ইতিহাসে তিনি বেশিদিন বেঁচে থাকা মানুষ। এই প্রবীণ ব্যক্তিটি চলে গেছেন না ফেরার দেশে। গত রোববার বিকেলে বার্ধক্যজনীত কারণে নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন। গতকাল সোমবার সকালে জানাযা শেষে নিজ বাড়ির উঠানেই তার মরদেহ দাফন করা হয়। জানাযায় তার ভক্ত-সাগরেদসহ এলাকার বহু মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তার দুই স্ত্রী, ৬ ছেলে, ২ মেয়েসহ অনেক নাতি-নাতনি-পুতি রয়েছে।
পঞ্চগড় জেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে তার অসংখ্য ভক্ত-সাগরেদ। প্রতিবছর তার বাড়িতে ওরস বসত। দুর দুরান্ত থেকে তার ভক্ত-সাগরেদরা হাজির হতেন ওই ওরষে। রাতভর ওরষে চলত জিকির-আসগার ও গান বাজনা। চান মিয়ার ছেলে কমিরুল ইসলাম জানান, আমরা দুই মায়ের ৬ ভাই ও ২ বোন। বড় ভাই নয়নের বয়স বর্তমানে ৭০ বছর। তিনি পঞ্চগড় পৌর এলাকার রামের ডাঙ্গায় থাকেন। আমার বাবার অনেক ভক্ত-সাগরেদ রয়েছে। প্রায় সময় আমাদের বাড়িতে লোকজন আসত। বাড়িতে যা রান্না হত তা সবাই মিলে ভাগ করে খেত। বাবার সাথে দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলত তারা। বছরে একটি ওরষ হত। সেদিন বহু মানুষ আসত দুর দুরান্ত থেকে।
পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, চানপাড়ার পাশের গ্রাম বলেয়াপাড়ায় আমার বাড়ি। আমি ৩০ বছর ধরে ওই এলাকার ইউপি সদস্য। ছোট বেলা থেকে চান ফকিরকে দেখেছি। চুল-দাড়ি পাঁকা। গলায় বিভিন্ন রঙের পুতির মালা, পড়নে বিভিন্ন রঙের জামা আর সাথে একটি অন্যরকম লাঠি। বয়সের ভারে ন্যুজ। মারা যাওয়ার সময়ও তিনি সেভাবেই ছিলেন।