দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সিভিল বিভাগের এক কর্মচারীর হামলায় ওই বিভাগের চারজনসহ ৫ শিক্ষককে আহত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। আহত শিক্ষকদের দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে প্রত্যেকে আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে চিকিৎসক জানায়।
এ ঘটনায় কোতয়ালী থানায় মামলার পাশাপাশি ওই কর্মচারী তাজুল ইসলামকে সাময়িক বহিস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ এবং চার সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান হাবিপ্রবির রেজিস্টার।
গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় হাবিপ্রবির একাডেমিক ভবন-২-এর তৃতীয় তলায় ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সিভিল বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষকরা হলেন, হাবিপ্রবির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান রোকনুজ্জামান (৩৫), সহযোগী অধ্যাপক বেলাল হোসেন (৩৫), প্রভাষক হারুন অর রশিদ (৩০), নির্মল চন্দ্র রায় (৩০) এবং সদ্য নিয়োগ পেয়ে বুধবার যোগদান করতে আসা প্রভাষক মাহাবুউর রহমান (৩০)।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত অফিস সহায়ক তাজুল ইসলাম (৪২) গত ২০বছরের অধিক সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত রয়েছেন।
জানা যায়, বুধবার বিভাগের শিক্ষক-ছাত্র ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একাডেমিক শিক্ষা সফরের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে সবার বিভাগে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সকাল ৯টা পেরিয়ে গেলেও কর্মচারী তাজুল ইসলাম অফিসে না আসায় তাঁকে মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে সোয়া ৯টার দিকে বিভাগে উপস্থিত হলে বিভাগের চেয়ারম্যান রোকনুজ্জামান তাঁকে দেরি করার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। এসময় তিনি উত্তেজিত হয়ে উল্টো তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এসময় তাজুল পাশের রুমে রাখা পানি খাওয়ার গøাস দিয়ে উপস্থিত শিক্ষকদের এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। এসময় হামলার আঘাতে চার শিক্ষকের মাথা এবং বিভাগের সভাপতির ঠোঁট ফেটে যায়। তাঁদের চিৎকারে অন্য কক্ষ থেকে অন্য কর্মচারী ও শিক্ষকেরা এসে তাজুলকে আটক করেন। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মো. সাইফুর রহমান এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্ত কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দীন সরকারকে আহবায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে। অভিযুক্ত কর্মচারীর বিরেিদ্ধ কোতয়ালী থানায় মামলা করে পুলিশের হাতে তাকে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত ওই কর্মচারী তাজুল কয়েক বছর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্ম সুপার প্রফেসর ড. গোলাম সারোয়ারের গায়ে হাত তোলার ঘটনায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়।