আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ ফেব্রæয়ারি মার্কা নির্বাচন এ দেশে আর হবে না। সুষ্ঠ ভোট হবে, ভয় পাবেন না। শেখ হাসিনার রুটিন দায়িত্ব। পৃথিবীর অন্য দেশের মতোই এ দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ওবায়দুল কাদের ¯েøাগান দিয়ে বলেন, খেলা হবে, কবে হবে, ডিসেম্বরে আসল খেলা। খেলা হবে নির্বাচনে। খেলা হবে দূর্নীতির বিরুদ্ধে। খেলা হবে আন্দোলনে। মোকাবেলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে। খেলা হবে হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে। খেলা হবে হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে যারা পাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে। নির্বাচন কমিশনের অধীনেই এ দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার দুপুরে দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহিদ ময়দানে দিনাজপুর জেলা আওয়ামীলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো উসকানি দেবেন না। মারামারি করবেন না। উস্কানী দিলে কিন্তু খবর আছে। আওয়ামলীগের কর্মীরা মাঠ ছেড়ে দেয়নি। সতর্ক পাহাড়ায় আছে। কে কি করে। আপনারা আমাদের উপর হামলা করবেন আর আমরা দাড়িয়ে দাড়িয়ে ললিপোপ খাবো। এটা কি হয়। খেলা হবে।
১০ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ বিষয়ে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, পরিবহন নেতাদের আমরা কখনো বলিনি পরিবহন ধর্মঘট করে বিএনপির সমাবেশে বাধাগ্রস্ত করতে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের আবারও বলতে চাই, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ ঘিরে কোনো ধর্মঘট করা যাবে না। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরিবহন চলাচলে কোনো প্রকারের বাধা দেওয়া হবে না। পরিবহন মালিক-শ্রমিক তারা যেন সেদিন গাড়ী চালায়। আগের দিনও চালায়। আমরা কোন বাধা দিব না। তারপরেও দেখবেন হাড়ি-পাতিল,মশারী-কয়েল নিয়ে হাজির হবে ঢাকা সিটিতে।
সোরওয়ারার্দী উদ্যানে আসেন। এখানে স্বাধীনতা স্তম্ভ হচ্ছে। ছাত্রলীগকে ভয় পাবেন না। শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্রলীগের একজন কর্মীও ধারের কাছে যাবে না। এসব অযুহাত দিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করবেন না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না। আজকে মানুষ কষ্টে আছে। সাধারণ মানুষ, স্বল্প আয়ের মানুষ কষ্টে আছে। শেখ হাসিনার রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।৩ থেকে সাড়ে ৩ঘন্টা ঘুমান একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী। সারাক্ষন কাজ করেন। তিনি জনগণের কষ্টের কথা চিন্তা করে ঘুমাতে পারেন না। ৭৫এর পর শেখ হাসিনার মতো সৎ মানুষ বাংলাদেশর রাজনীতিতে আর আসেননি। আমরা ভাগ্যবান শেখ হাসিনার মতো নেতা পেয়েছি। আপনারা সবাই দলে ঐক্যবদ্ধ থাকুন।
দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহিদ ময়দানে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এমপি এবং প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
সম্মানিত অতিথি ছিলেন আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি।
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপির সভাপতিত্বে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরীর সঞ্চলনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, আওয়ামলীগের রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি, মনোরঞ্জনশীল গোপাল এমপি, শিবলী সাদিক এমপি, এ্যাড. জাকিয়া তাবাসসুম জুঁই এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সদস্য এ্যাড. হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য এ্যাড. সফুরা বেগম রুমি।
এসময় সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলতাফুজ্জামান মিতা, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ফারুকুজ্জামান চৌধুরী মাইকেল, সাংগঠনিক সম্পাদক এড. তহিদুল হক সরকার, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ্যাড. দেলোয়ার হোসেন, একেএম মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, মির্জা আশফাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১০বছর পর গতকাল সোমবার দিনাজপুর জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনকে ঘিরে শহর রঙিন সাজে পোস্টার-ব্যানারে রাস্তা, সভা মঞ্চ, আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভরে যায়। তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। জেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিলে মোট ৪৭৭জন কাউন্সিলর। সব শেষ কাউন্সিল হয়েছিল ২০১২সালের ২৩ডিসেম্বর।