বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে গাছে গাছে ফুটেছে আমের মুকূল। প্রকৃতিতে এখনো ফাল্গুন: কিন্তু এরই মধ্যে গাছে গাছে ফুটেছে আমের মুকুল। চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে আমের মুকুলের মৌ মৌ ঘ্রাণ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। বসন্তের হাওয়ায় গাছে গাছে দুলছে আমের সোনালি মুকুল। সবুজ পাতার ফাঁকে মুকুল থেকে ইতোমধ্যেই আমের গুটি বের হতে শুরু হয়েছে। রাতভর আমের গুটিতে শিশির বিন্দু ভিজে থাকে, সকালের রোদের আভা পড়তেই গুটিগুলো চকচক করে শুক্রবার (১০ মার্চ) সরেজমিনে বীরগঞ্জ উপজেলা সদর ও পৌর নগরী ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই মুকুল থেকে গুটি আম আসতে শুরু করেছে। আমের গুটি আসায় গাছ মালিকরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন। অনেকেই আম গাছের পরিচর্যায় সময় দিচ্ছেন। কেউ কেউ গাছের উপরে নেট দিয়েছেন, আবার অনেকে পোকামাকড়ের হাত থেকে আম বাঁচাতে কীটনাশকও দিচ্ছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলার শিবরামপুর, পলাশবাড়ী,শতগ্রাম, পাল্টাপুর, সুজালপুর,নিজপাড়া, মোহাম্মদপুর,ভোগনগর, মোহনপুর ও মরিচাসহ ১১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামে আমের বাগানে গাছের মুকুল থেকে গুটি আম আসতে শুরু করেছে।
আম বাগানে বসন্তের ছোঁয়া কেবলমাত্র এসেছে বলে মনে হচ্ছে। আম বাগানগুলোতে প্রতিটি গাছের ফুল একটু একটু করে ফোঁটতে শুরু করেছে আর প্রকৃতির বিরাজমান সেই ফুলের পসরা সাজিয়ে বসা মৌ মৌ গন্ধ সবাইকে বিমোহিত ও পুলকিত করছে। আর সেই সাথে মন মাতানো আম্র ফুলের ঘ্রানের টানে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহে পাগল প্রাণ হয়ে পড়েছে এ যেনো এক মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বীরগঞ্জ উপজেলায় এ বছর আমের ভালো ফলনের আশা করছেন সবাই। কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়নের বাগান মালিক মো.সাদেকুল হক মিলন জানান,গত বছরের তুলনায় এবছর আমের বাম্পার ফলনের আশা রাখছি। ২০ একর জমির উপর বড় আম বাগানে মুকুলের ফাঁকে ফাঁকে আমের গুটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্যদিকে আরও ১০থেকে ১১টি বাগনে একই অবস্থা দেখছি। সবমিলিয়ে এই মৌসুমে ৪ হাজার-২ হাজার মণ উৎপাদনের আশাবাদী।তবে এবার লিচুর মুকুল নাই বলেই চলে। আমার ৮-৯টি লিচু বাগানে মুকুলের পরিবর্তে শুধু নতুন পাতা আসতে দেখা যাচ্ছে। এবছর বীরগঞ্জ উপজেলা বোম্বাই নিচুর উৎপাদন কম হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উপজেলার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি লিচু বাগানের মধ্যে হামিদুল ইসলাম এর বাগানে মুকুল তেমন চোখে পড়েনি। সিরাজ মনির বাগানে বোম্বোই লিচু না হওয়ার সম্ভবনাই বেশি। বীরগঞ্জ পৌরসভার সুজালপুর জগদল গ্রামের লিচু চাষি কালাম মাস্টার বলেন, কৃষি কর্মকর্তারাও আমাদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন সেই অনুযায়ী বাগানে পরিচর্যা করে যাচ্ছি। আমি এবার ৬ একর জমিতে আম আর ৪ একর জমিতে লিচু গাছের নিয়মিত পরিচর্যা করে আসছি। কিন্তু এবার লিচুর মুকুল অন্যবারের তুলনায় ভালো দেখা যাচ্ছে না। মুকুলের পরিবর্তে নতুন পাতা লিচুর ফল নিয়ে আশঙ্কা দিয়েছে। সময় এখন লিচুর গাছে মুকুল আসার। কিন্তু মুকুলের পরিবর্তে গাছে গাছে এসেছে নতুন পাতা। মুকুল আসার এই সময়ে নতুন পাতার আগমন ভাবিয়ে তুলেছে বীরগঞ্জ উপজেলার লিচু চাষিদের। কারণ মুকুলের পরিবর্তে নতুন পাতা আসলে লিচুর ফলন ভালো পাওয়া যাবে না। আর ফলন না পাওয়া গেলে বছরজুড়ে লিচু গাছে যে পরিচর্যা বাবদ খরচ উঠানো কঠিন হয়ে যাবে।