স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানী সেনার ব্্রাশ ফায়ারে নিহত ৮জন এবং জীবিত ২জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করলেন দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কামদেবপুর ও রানীপুর গ্রামের শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
বুধবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত দাবী উপস্থাপন করে অত্র এলাকার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রানীপুর গ্রামের বাসিন্দা মো: রফিকুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ৫জুন শনিবার রাতের প্রথম প্রহরে মুরারীপুর গ্রামে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীর সাথে তুমুল সুন্মখ যুদ্ধ হয়, এসময় পাকা হানাদার বাহিনীর ৯ জন সদস্য ঘটনাস্থলে মারা যায়। বিপর্যুস্ত পাকিস্তানী বাহিনীর সেনারা তখন পালিয়ে গেলেও পরবর্তীতে তারা সংঘটিত হয়ে আবারো ওই গ্রামে হামলা চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মো: গিয়াস উদ্দীন মাষ্টার ও তার দুই পুত্র মো: তৈমুর রহমান ও জিল্লুর রহমানসহ আমজাদ হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন, আয়নাল হক, নুর ইসলাম, এত্তাজ আলী, আবুল হোসেন ও মো: নজরুল ইসলামকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে কামদেবপুর গ্রামের আয়নাল হকের বাড়িতে আটকে রাখে। পরের দিন বিকাল ৪টায় পাকিস্তানী সেনারা আটক মুক্তিযোদ্ধাদের কামদেবপুর রানীপুর শালবাগানে নিয়ে ব্রাশ ফায়ারের মাধ্যমে হত্যা করে।
পাকিস্তানী সেনাদের এই হামলায় উপরে উল্লেখিত আটক ৮ জনই শহীদ হন এবং ভাগ্যক্রমে এই ব্রাশ ফায়ারের হাত থেকে বেঁচে যান মরহুম মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দীনের পুত্র মো: জিল্লুর রহমান এবং মৃত হযরত আলীর পুত্র মো: নজরুল ইসলাম। দেশ স্বাধীন হওয়ার এতদিন পরেও মৃত ৮ জন এবং জীবিত ২ জনকে আজো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় ভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। তবে উক্ত স্থানটিতে নিহত শহীদদের স্মরনে গণহত্যা,নির্যাতন ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয় কর্তৃক একটি স্মৃতি স্তম্ভ নির্মান করা হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে তারা আরো বলেন, আমরা জেনেছি সরকার স্বাধীনতা সংগ্রামে সকল শহীদকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দানের পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন। তাই আমাদের গ্রামের উল্লেখিত শহীদ ৮জন এবং জীবিত ২ জনসহ মোট ১০জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির দাবী করছি। উল্লেখ,সরকার ইতিমধ্যে মো: তৈমুর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন,পাকিস্তানী সেনার ব্রাশ ফায়ারের হাত থেকে বেঁচে আসা মো: জিল্লুর রহমান, মো: নজরুল ইসলামসহ রইশ উদ্দীন,মন্তাজ আলী, আব্বাস আলী প্রমুখ।