চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি\ কোরবানীর বাজার কাঁপাতে আসছে দিনাজপুরের ৩০মন ওজনের ‘কালা পাহাড়’। প্রায় ৩ বছর ধরে ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুটি পালন করে আসছেন নিয়ামতুল্ল্যাহ শাহ। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন এ গরুটিকে। পরম যতœ আর পরিচর্যায় পালন করা ওই গরুটির নাম রেখেছেন ‘’কালা পাহাড়’।
নিয়ামতুল্ল্যাহ শাহ তার ৩ বছর বয়সী গরুটির দাম হেঁকেছেন ২০লাখ টাকা। গরুটির ওজন প্রায় ৩০মণ। ইতিমধ্যেই বিশালাকার গরুটিকে দেখতে বিভিন্ন গ্রামের লোকজনসহ ব্যবসায়ীরা দেখতে আসছেন এবং দাম করছেন। তিনি আশায় আছেন-ভালো দাম পেলে ক্রেতার হাতে ‘কালা পাহাড়’কে তুলে দেবেন।
খামারি মো. নিয়ামতুল্ল্যাহ শাহ দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউপির দক্ষিণ দুবলিয়া গ্রামের বাহারশাহ হাজীপাড়ার বাসিন্দা। তিনি ব্যবসার সাথে জড়িত। এখন তার খামারে গরু রয়েছে ৮টি। এই কালা পাহাড়কে দেখতে যাচ্ছেন বিভিন্ন এলাকার লোকজন নিয়ামত্যুল্লাহ শাহর খামারে। তিনি দাবী করেন এটি জেলায় সবচেয়ে বড় গরু। আগামী দিনাজপুরের বড় আমবাড়ী হাটে গরুটিকে ওঠানো হতে পারে বলে জানা যায়।
বিক্রির ব্যাপারে খামারি নিয়ামতুল্ল্যাহ শাহ বলেন, ফ্রিজিয়ান জাতের ৮টি গরু নিয়ে ৬ বছর আগে নিজ বাড়িতে খামার গড়ে তুলেন। বর্তমানে খামারে ৮টি গরু রযেছে। যার মধ্যে রয়েছে ৪টি ষাঁড়, ২টি গাভী আর বাকিগুলো বাছুর। এসব গরুর মধ্যে একটিকে এ বছর ঈদুল আজহায় বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছি। গরুটি এতটাই বড় হয়েছে যে গোয়ালঘর থেকে বের করতে হলে ইটের দেওয়াল ভেঙ্গে তাকে বের করতে হবে। গরুটিকে ১০-১২ জন লোক ছাড়া আটকানো যাবে না। কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী গরুটিকে দেখে ৮-১০ লাখ টাকা দাম করছেন। কিন্তু আমার এ দাম পছন্দ না। গরুটি বিক্রির জন্য দাম দিয়েছি ২০ লাখ টাকা। কোরবানির হাটে গরুটিকে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবো আশা করি।
তিনি আরো বলেন, গরুটির পিছনে দৈনিক ১২-১৫শ টাকার মতো খরচ হচ্ছে। প্রচন্ড গরম ও তাপমাত্রার কারণে গরুটিকে প্রতিদিন ৬-৭বার গোসল করাতে হয়েছে। গরুটির মাথার ওপর সর্বদা তিনটি ইলেকট্রিক ফ্যান চালু আছে। গরুটিকে দেখভাল করার জন্য একজন কর্মচারি রয়েছে। এই গরুটিসহ খামারের বাকি গরুগুলোকে খৈল, ভূষি, ভূট্ট ও ঘাস খাওয়ানো হয়। এছাড়া খামারে থাকা ১টি গাভী প্রতিদিন দেড় লিটার করে দুধ দিচ্ছে।
কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী জানান, গরুটির প্রায় ২৫-২৭ মণ মাংস হবে। তারা গরুটির দাম ১০-১৫ লাখ টাকা হবে বলে ধারণা করছেন।
কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, গো-খাদ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেকেই গরু-ছাগল পালন করা বন্ধ করে দিয়েছেন। অনেকেই খামারেরর ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। এরপরেও এলাকার গরুটি এরকম সাড়া ফেলবে কল্পনাও করিনি। এ গরুটির ভালো দাম পেলে অনেকেই কোরবানির গরু পালনে আগ্রহী হবেন।
খানসামা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু পালনে আগ্রহী হন না। তবে নিয়ামতুল্ল্যাহ শাহ এতে সফল হয়েছেন। গরুটির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। গরুটিকে যেন কোন প্রকার ঔষধ প্রয়োগ করা না হয় তা মনিটরিং করা হচ্ছে।গরু মালিককে প্রয়োজনীয় সকলপ্রকার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও কোরবানি উপলক্ষ্যে যেসব পশু বাজারজাত করা হবে, সেসব পশু সুস্থ-সবল কিংবা রোগাক্রান্ত কিনা তা নির্ণয়ের জন্য প্রতিটি পশুর হাটে আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করবে।