বিকাশ ঘোষ, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে চলতি বছর গৌরমতি আমের রপ্তানি আয় বেড়েছে। মূলত বেসরকারি ও সরকারি উদ্যোগে উন্নত মানের আম সরবরাহ করায় আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি আমের চাহিদা বাড়ায় রপ্তানি আয় বেড়েছে। লিচুর জন্য বিখ্যাত হলেও বৈরী আবহাওয়া সত্বেও এবারে আমের বাম্পার ফলন হয়েছে বীরগঞ্জে। তবে ব্যাপক ফলনের কারণে আমের চাহিদা নেই দেশের বাজারে। তাই আম নিয়ে বিপাকে পড়েছে অনেক বাগান মালিক, ব্যবসায়ী এবং কৃষক । দেশের বাজারে চাহিদা না থাকায় বিদেশে রপ্তানীর চেষ্টায় রয়েছেন আমবাগান মালিক। ফলে বিদেশে রপ্তানীর অপেক্ষায় দিনাজপুরের বীরগঞ্জের আম বাগানে গাছে গাছে ঝুলছে নতুন জাতের গৌর মতি আম।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ৩২হাজার ৮শত ৯৬হেক্টর। এর মধ্যে আম বাগান রয়েছে ৩১২ হেক্টর জমিতে। বিদেশে রপ্তানীর লক্ষ্যে ২৫ হাজার গৌরমতি আম পরিবেশ বান্ধব কৌশলের মাধ্যমে ব্যাগিং করা হয়েছে। সেখানে কোন প্রকার রাসায়নিক সার বা বিষ ব্যবহার করা হয়নি। নতুন জাতের গৌরমতি আম পাকার সময় আগামী ১৫ আগষ্ট হতে ২০ সেপ্টম্বর পর্যন্ত। তবে ইতমধ্যে দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা হতে বিদেশে আম রপ্তানী শুরু হয়েছে এবং বীরগঞ্জ উপজেলা হতে আম রপ্তানীর জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।
আম বাগান মালিক উপজেলার ১১নং মরিচা ইউনিয়নের ডাবরা জিনেশ্বরী গ্রামের মোঃ গোলাম মোস্তফা জানান, ২০১৭ সালে ৭৫ শত জমিতে ১৫০টি গৌরমতি আম গাছের চারা রোপন করেন। ২০২২সালে গাছে ব্যাপক হারে ফলন শুরু হয়। তবে এ বছর বাগানে আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে বিদেশে রপ্তানীর উদ্যেশে ২ হাজার ৫০০টি আম ব্যাগিং পদ্ধতিতে পরিচর্যা করে বিক্রয় যোগ্য করে তোলা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমের কোন গ্রাহক না পাওয়ায় গাছেই ঝুলে রয়েছে আনুমানিক প্রায় ২০০মণ রপ্তানিযোগ্য আম। দ্রুত যদি রপ্তানী কিংবা বাজারজাত না করা হয় তাহলে গাছেই পচে যেতে পারে আমগুলো। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
একই কথা জানিয়ে আম বাগান মালিক আলহাজ্ব মোকারম হোসেন পলাশ বলেন, সরকারী ভাবে দ্রুত আম রপ্তানীর বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা না হয় তাহলে আমের পরিচর্চা করতে যে ব্যয় হয়েছে এখন আম যদি না বিক্রয় হয় তাহলে আম বাগান মালিকদের পথে নামতে হবে। এখন কৃষি বিভাগ আম রপ্তানী অথবা বিক্রয়ের জন্য দেশে কিংবা বিদেশে যোগযোগ করেন তাহলে আম বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা তাদের পুজি ফেরত পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আবু সাঈদ আকন্দ জানান, বিদেশে রপ্তানীর লক্ষ্যে ২৫হাজার গৌরমতি আম পরিবেশ বান্ধব কৌশলের মাধ্যমে ব্যাগিং করা হয়েছে। গৌরমতি আমের জাতটি দেরী পাকা শুরু করে। ফলে বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় বেশ মূল্য পাওয়া যায়।প্রতিটি আমের ওজন ৩শত গ্রাম হতে ৫শত পর্যন্ত হয়ে থাকে। সেখানে কোন প্রকার রাসায়নিক সার বা বিষ ব্যবহার করা হয়নি। কিন্তু এ বছরে আমের বাম্পার ফলনের কারণে দেশে বিদেশে আমের চাহিদা কম থাকায় এখন পর্যন্ত কোন গ্রাহক মেলেনি। তবে কৃষি বিভাগ আম রপ্তানী ও স্থানীয় ভাবে বাজারজাত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
Bkash
Bkash Gosh