হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক পর্যায়ের লেভেল-১, সেমিস্টার-১ এর ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ৪ টি অনুষদের ওরিয়েন্টেসন কার্যক্রম মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ওরিয়েন্টেসন কার্যক্রমের শুরুতে শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে কালো ব্যাচ বিতরণ করা হয়। অডিটোরিয়াম-১ এ সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত কৃষি অনুষদ এবং বিকেল সাড়ে ৩ টা থেকে সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত সোশ্যাল সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিস অনুষদ এবং অডিটোরিয়াম ২ এ সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে দুপুর ১.৩০ পর্যন্ত ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদ ও দুপুর ২.৩০ থেকে বিকাল ৩.৩০ পর্যন্ত ফিসারিজ অনুষদের ওরিয়েন্টেসন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। সকল অনুষদের ওরিয়েন্টেসন কার্যক্রমে প্রধান অতিথি ছিলেন হাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.এম.কামরুজ্জামান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট অনুষদের সকল বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মোঃ মামুনুর রশিদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ মাহাবুব হোসেন। ওরিয়েন্টেসন কার্যক্রমে সভাপতিত্ব করেন স্ব স্ব অনুষদের সম্মানিত ডীন মহোদয়গণ। এ সময় ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় ¯øাইডের মাধ্যমে তুলে ধরেন এবং প্রক্টর মহোদয় র্যাগিং এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এ সময় তারা বলেন র্যাগিং এর বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে ২১ ও ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি পাশাপাশি সচেতনতা তৈরির জন্য ক্যাম্পাসের গুরুত্বপ‚র্ণ স্থানে ব্যানার, পোস্টার লাগানো হয়েছে। যেকোন স্থানে র্যাগিং এর কোন ঘটনা দেখা মাত্রই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানাতে বলা হয়।
ওরিয়েন্টেসন কার্যক্রমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান বলেন, আগস্ট মাস শোকের মাস। বক্তব্যের শুরুতেই আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫সালে ঘাতকদের হাতে নিহত জাতির পিতার পরিবারের অন্যান্য সকল শহীদকে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন সংগ্রাম, জেল, জুলুম, ও নির্যাতন সহ্য করেছিলেন সোনার বাংলা তথা একটি আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছেন তারই রক্ত ও আদর্শের যোগ্য উত্তরস‚রি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এখন আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের মাধ্যমে একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ রচনা করার দিকে যাচ্ছি। স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সিটিজেন হতে হবে আমাদেরকে। তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন স্কুল কলেজ জীবন শেষ করে তোমরা নিজেদের মেধার স্বাক্ষর রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছো। এতদিন তোমরা বাবা-মায়ের প্রত্যক্ষ গাইডেন্সে ছিলা কিন্তু এখন হয়তো সেটা সার্বক্ষণিক সম্ভব হবেনা, সেজন্য নিজের আত্মবিশ্বাসকে অনেক বেশি বাড়াতে হবে। আত্মবিশ্বাস ও লক্ষ্য যার যত দৃঢ় হবে সে ততো বেশি এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তোমাদের ভাল ফলাফলের পাশাপাশি নিজেকে একজন ভাল ও মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতা করে তোমরা আজকের অবস্থানে আসতে পেরেছো। তাই এ সাফল্যকে কাজে লাগাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম তোমাদের হাত ধরে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আমি আশা করি। ছাত্র জীবনে ভাল জিনিসগুলোকে গ্রহণ এবং খারাপ গুলোকে বর্জন করতে হবে। মাদক থেকে দ‚রে থাকতে হবে। তিনি বলেন র্যাগিং নিয়ে অনেকের মাঝে একটা আতঙ্ক কাজ করে। এ বিষয়ে আমি দৃঢ় কন্ঠে বলতে চাই র্যাগিং এর বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। কোথাও র্যাগিং এর কোন তথ্য পাওয়া গেলে সাথে সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরিশেষে তিনি সুন্দরভাবে ওরিয়েন্টেসন কার্যক্রম আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
ওরিয়েন্টেসন কার্যক্রমে নবীন শিক্ষার্থীদের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি সংক্রান্ত ফোল্ডার, বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সম্বলিত মগ, ক্লাস রুটিন ও একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, আজ অডিটোরিয়াম ২ এ সকাল সাড়ে ৯ টায় বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ, দুপুর ২ টায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ, অডিটোরিয়াম ১ এ সকাল ১১ টায় ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ ও বিকেল ৩ টায় বিজ্ঞান অনুষদের ওরিয়েন্টেসন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে।