বুধবার , ২৩ আগস্ট ২০২৩ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে পেঁয়াজ আমদানি, কমেছে দাম

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
আগস্ট ২৩, ২০২৩ ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ

হাকিমপুর প্রতিনিধি\দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁযাজের আমদানি বেড়েছে। এতে দেশের বাজারে সরবরাহ বাডায দাম কমতির দিকে রয়েছে। সম্প্রতি ভারত সরকারের শুল্ক আরোপ করার পর দাম বেশি হওযায বিপাকে পড়েছেন বন্দরে পেঁযাজ কিনতে আসা পাইকাররা। তবে আমদানি অব্যাহত থাকলে দাম খুব একটা বাডবে না বলে জানিয়েছেন পেঁয়াজ আমদানিকারকরা।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে নাসিক ও ইন্দোর এই দুই জাতের পেঁযাজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। পেঁযাজের ওপর শুল্ক আরোপের খবরে রবিবার (২০ আগস্ট) বন্দরে আমদানি করা ইন্দোর জাতের পেঁযাজ ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। আর নাসিক জাতের পেঁযাজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। যা শনিবার ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।
সোমবার (২২ আগস্ট) বন্দর দিয়ে পেঁযাজের আমদানি বাডায ইন্দোর জাতের পেঁযাজ কিছুটা কমে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আর নাসিক জাতের পেঁযাজ ৫৩ থেকে ৫৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দরে পেঁযাজ কিনতে আসা মিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা হিলি স্থলবন্দর থেকে পেঁযাজ কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকি। তবে গতকালের চেয়ে আজ পেঁযাজের বাজার কিছুটা কম। রবিবার বন্দর থেকে প্রতি কেজি ইন্দোর জাতের পেঁযাজ ৫৫ আর নাসিক জাতের পেঁযাজ ৬০ টাকা দরে কিনতে হয়েছিল। পেঁযাজের আমদানি কমে যাওযায চাহিদার তুলনায সরবরাহ কমায় বাডতি দামে পেঁযাজ কিনতে আমাদের খুব সমস্যায় পডতে হয়েছিল। তবে আজ নতুন পেঁযাজ আমদানি হওযায় দাম কমে এসেছে। বর্তমানে ইন্দোর জাতের পেঁযাজ ৪৮ থেকে ৫০ আর নাসিক জাতের পেঁযাজ ৫৩ থেকে ৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনও যে দাম রয়েছে তাতে কিনতে যেমন সমস্যা হচ্ছে, মোকামে বিক্রি করতেও সমস্যা হচ্ছে।
পাইকার সিরাজুল ইসলাম বলেন, শনিবার বন্দর দিয়ে পেঁযাজ কিনে নিয়ে গেলাম প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে। শুল্ক আরোপের খবরে সেই পেঁযাজ রবিবার হলো ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। বাডতি দামের কারণে আমরা সেদিন পেঁযাজ কিনতে পারিনি। সোমবার বন্দর দিয়ে পেঁযাজের আমদানি বাডায দাম কিছুটা কমেছে। বর্তমানে ৪৮ থেকে ৫৩ টাকা কেজি দরে প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে। আমদানির ফলে পেঁযাজের দাম একটু কমলেও, আগের চেয়ে বেশিই আছে।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁযাজ আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম বলেন, শুল্ক আরোপের ফলে বর্তমানে ভারতের বাজারে আমাদের প্রতি কেজি পেঁযাজ কিনতে হচ্ছে ২৮ রুপি দরে। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ রয়েছে সাড়ে ৬ রুপির মতো। আর শুল্ক রয়েছে ৪ থেকে ৫ রুপির মতো। সব মিলিয়ে বন্দর দিয়ে বর্তমানে যেসব পেঁযাজ আমদানি হচ্ছে, তা আমাদের বন্দরে পৌঁছানো পর্যন্ত পডছে ৫১ টাকার মতো। আমদানি করা এসব পেঁযাজ পাইকারিতে ৫২ থেকে ৫৩ টাকা দরে বিক্রি করছি।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শাহিনুর রেজা বলেন, বন্যার কারণে ভারতেই পেঁযাজের উৎপাদন কমায সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যে কারণে তাদের সরকার পেঁযাজের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিযন্ত্রণে রাখতে এবং পেঁযাজ রফতানিতে নিরুৎসাহিত করতে গত শনিবার রাতে রফতানির ওপর ৪০ভাগ শুল্ক আরোপ করে। কিন্তু কেজিপ্রতি কত টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হবে, সেটি নির্ধারণ না হওযায রবিবার বন্দর দিয়ে পেঁযাজের আমদানি কমে যায। এদিন বন্দর দিয়ে মাত্র সাত ট্রাক পেঁযাজ আমদানি হয, যা আগের টেন্ডারে ছিল।
তিনি আরও বলেন, এদিন বন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমাণে পেঁযাজ আমদানি হওযায দেশের বাজারে পণ্যটির সরবরাহ বেড়েছে, দামও কমতে শুরু করেছে। আমাদের প্রচুর পরিমাণে পেঁযাজের এলসি খোলা রয়েছে। পাইপলাইনে প্রচুর পরিমাণে পেঁযাজবাহী ট্রাক রয়েছে। এসব পেঁযাজ ঢুকলে দাম খুব একটা বাডবে না বলেও জানান তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ভারত সরকার পেঁযাজের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে রবিবার বন্দর দিয়ে পেঁযাজের আমদানি কমে যায। এদিন বন্দর দিয়ে মাত্র সাতটি ট্রাকে ২১১ টন পেঁযাজ আমদানি হয়েছিল। তবে সোমবার থেকে বন্দর দিয়ে নতুন শুল্কের পেঁযাজ আমদানি শুরু হয়েছে। এদিন বন্দর দিয়ে ৫৯টি ট্রাকে ১ হাজার ৭৯১ টন পেঁযাজ আমদানি হয়। মঙ্গলবার বন্দর দিয়ে পেঁযাজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। বিকাল ৩টা পর্যন্ত বন্দর দিয়ে ১৫ ট্রাক পেঁযাজ আমদানি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পেঁযাজ যেহেতু কাঁচা পণ্য ও দ্রুত পচনশীল, তাই কাস্টমসের সব প্রক্রিযা শেষে দ্রুত যেন বন্দর থেকে খালাস করে নিতে পারে, সে জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছে।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও