রবিবার , ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) আসনে আওয়ামী লীগে মনোনয়নপ্রত্যাশীর ছড়াছড়ি, সক্রিয় বিএনপি, নীরবে মাঠে জামায়াত

প্রতিবেদক
ঠাকুরাগাঁও সংবাদ
সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩ ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) থেকে: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি রয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে মাঠের উত্তাপ ততই বাড়ছে।এখন প্রতিটি রাস্তায় মোড়ে মোড়ে, চায়ের দোকানে, গাছের নিচে কিংবা বাড়ির সামনে খাড়ার ওপর বসে নির্বাচরে খোশগল্প চলছে। কীভাবে নির্বাচন হবে এবার? এবারও কী ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন হবে, নাকি তত্ত¡াবধায় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে।এসব এখন আলোচনার মূখ্য বিষয়। এ নির্বাচনকে ঘিরে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণা শুরু না হলেও আগামীতে কোন দল থেকে কে মনোনয়ন পাবেন তা নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। সারাদেশের ন্যায় এমন আলোচনা হতে পিছিয়ে নেই দিনাজপুর-৪ আসনটিও।
আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। পাড়া-মহল্লায় তৈরি হয়েছে নির্বাচনী আমেজ। ভোটারদের মন জয় করতে নানা প্রতিশ্রæতি দিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। চলছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনের প্রতিযোগিতা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও প্রচার-প্রচারণায় বেশ সরগম। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ভোটারদের নিকট সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরছেন।
চিরিরবন্দর উপজেলার ১২টি ও খানসামা উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) আসনটি গঠিত। এ আসনটি বেশির ভাগ সময়ই আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রকাশ্যে প্রচার-প্রচারণা চালালেও বিএনপি এক দফা বাস্তবায়নে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে। তত্ত¡াবধায়ক সরকার কিংবা নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার ছাড়া বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। তারপরেও কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের দিকে তাঁকিয়ে আছেন বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দলাদলি ও গ্রæপিং চলছে। একে কাজে লাগিয়ে আগামী নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে নিতে চায় বিএনপি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে পাশে চায় দলটি। ঘরোয়াভাবে চলছে বিএনপি’র প্রচার-প্রচারণা। তৃণমূলের সাধারণ মানুষ জানান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও নীরবে মাঠে প্রচার-প্রচারণা চলিয়ে যাচ্ছে। এ আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেন্দ্র করে চলছে ইতিবাচক আলোচনা। ভোটের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নন। এ আসনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র মধ্যে। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্র্থীর বিপরীতে একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয় আমজনতা মনে করছেন। দুই দলে জনপ্রিয় প্রার্থী হলে লড়াই হবে সমানে সমান।
এ আসনে বিএনপি জোটের হয়ে মনোনয়ন চাইতে পারেন জামায়াতে ইসলামীর রংপুর অঞ্চল টিম সদস্য, সাবেক জেলা আমীর ও সাবেক চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আফতাবউদ্দিন মোল্লা।
বিএনপিতে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র অন্যতম সদস্য, জেলা বিএনপি’র সদস্য ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব মো. আখতারুজ্জামান মিয়া। এছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি ও লুসাকা গ্রæপের চেয়ারম্যান শিল্পপতি আলহাজ্ব হাফিজুর রহমান সরকার, চিরিরবন্দর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি অ্যাড. আব্দুল হালিম ও খানসামা উপজেলা পরিষদের ৩ বারের ভাইস্ চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান এটিএম সুজাউদ্দিন (লুহিন) শাহ।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি আওয়ামী লীগের একজন সম্ভাব্য প্রার্থী। সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের চিফ কনসালট্যান্ট ও প্রখ্যাত চিকিৎসক এবং চিরিরবন্দর আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা ডা. এম আমজাদ হোসেন। কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক এমপি ও হুইপ আলহাজ্ব মো. মিজানুর রহমান মানুও মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় আরো রয়েছেন-জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তারিকুল ইসলাম তারিক, চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস্ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জ্যোতিষ চন্দ্র রায়, চিরিরবন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. আহসানুল হক মুকুল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. সালাউদ্দিন শাহ্, চিরিরবন্দর উপজেলা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মো. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং স্পেশাল জজ আদালতের স্পেশাল পিপি মো. সামসুর রহমান পারভেজ, জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক জেলা যুবলীগ ও আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব অ্যাড. সাইফুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা শেখ রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য ও জেলা কৃষক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হাবিব, জেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন, খানসামা উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক প্রমথ চন্দ্র রায়। সম্ভাব্য এসব মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তাদের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্নভাবে লবিং করে যাচ্ছেন। দিনাজপুর-৪ আসনে এসব মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে কে পাবেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ! অপেক্ষায় দিন গুনছেন এসব প্রার্থীরা। দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে জানা গেছে, নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ এলাকায় দলীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নিজেদের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে, এককভাবে নির্বাচন করলে জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন-খানসামা উপজেলা জাপার আহŸায়ক কমিটির আহŸায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোনাজাতউদ্দিন চৌধুরী মিলন ও উপজেলা জাপার আহŸায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল আলীম হাওলাদার।
এদিকে, স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ এবং ১৯৭৯ সালে দিনাজপুর-৪ আসনে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগের প্রয়াত অ্যাড. শাহ মাহাতাব আহমেদ। ১৯৮৬, ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের হয়ে আলহাজ্ব মো. মিজানুর রহমান মানু জয়লাভ করেন। ১৯৮৮ সালে জাপানেতা প্রয়াত সাখাওয়াত হোসেন জয়লাভ করেন। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের তিন বারের এমপি মিজানুর রহমান মানুকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র আলহাজ্ব মো. আখতারুজ্জামান মিয়া। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি’র আলহাজ্ব মো. আখতারুজ্জামান মিয়াকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মিজানুর রহমান মানু আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি নির্বাচিত হন।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সাধারণ, তরুণ ও নবীন ভোটাররা অনেকেই জানান-স্মার্ট দেশে স্মার্ট নেতৃত্ব প্রয়োজন। যিনি দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম, মাদক ও সকল ধরণের বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে আগামীদিনে নেতৃত্ব দেবেন এবং এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন এরকম প্রার্থীকেই তারা ভোট দেবেন।

সর্বশেষ - ঠাকুরগাঁও

আপনার জন্য নির্বাচিত

থার্টি ফার্স্ট নাইট দিনাজপুরে বেড়েছে হাঁস-মুরগি-মাংসের দাম

পীরগঞ্জে বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের খাদ্য সহায়তা

রাণীশংকৈলে এসএসসি ৯৭-এর আয়োজনে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

পঞ্চগড় আটোয়ারীতে কাঞ্চনজঙ্ঘা হেল্পিং ফান্ডের ঈদের উপহার এবং ফলজ গাছ বিতরণ

ঠাকুরগাঁওয়ে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ

হাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর এর পিএইচডি ফেলো’র গবেষণা মাঠ পরিদর্শন

দিনাজপুর ইনষ্টিটিউটের নির্বাচনে আব্দুস সামাদ সভাপতি ও সুনীল চক্রবর্তী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত

দিনাজপুর ভলিবল ফ্রেন্ডস এর আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনী প্রীতি ভলিবল ম্যাচ ও ক্রীড়া সংগঠককে সংবর্ধনা প্রদান

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে কেবিন ব্লকের উদ্বোধন

বোদায় হাইওয়ে পুলিশের প্রচার অভিযান

বোদায় হাইওয়ে পুলিশের প্রচার অভিযান