দিনাজপুর শহরের মির্জাপুর বাস টার্মিনাল এলাকায় প্রকাশ্যে জয়া বর্মণ নামের নারী হোটেল শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পরকীয়া প্রেমিক মো.তরিকুল ইসলাম চান্দুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার ভোরে খানসামা উপজেলার পাকেরহাট বাজারের মাহিন সুইট নামে এক হোটেল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আটক অভিযুক্ত মো. তরিকুল ইসলাম চান্দু (২৮)দিনাজপুরের সদর উপজেলার মুরাদপুর দামপুকুর গ্রামের আসরাফ আলী ও তাহমিনা দম্পতির পালিত ছেলে। তিনিও একজন হোটেল শ্রমিক।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় ৭টার দিকে দিনাজপুর শহরের মির্জাপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় কালুর মোড়ে এক হোটেলের সামনে জয়া বর্মনকে দা দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যান তরিকুল।
নিহত হোটেল শ্রমিক জয়া বর্মন (৩০) ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ থানার বোনডাঙ্গা গ্রামের স্বপল রায়ের স্ত্রী ও লালমনিরহাটের বান্দরকুড়ার প্রভাস রায়ের মেয়ে। দিনাজপুর শহরের মির্জাপুর বাস টার্মিনাল এলাকার এক হোটেলে কর্মরত ছিলেন জয়া। সে দিনাজপুর শহরের ফকিরপাড়া মহল্লায় আব্দুস সামাদের বাসায় ভাড়া থাকেন।
গ্রেফতারের পর তরিকুল পুলিশকে জানান, পাঁচবছর আগে তার স্ত্রী মারা যান। এরপর থেকে তিনি বাস টার্মিনালে হোটেল সাউদিয়ায় বয় হিসেবে কাজ করেন। সেখানেই কাজ করতেন জয়া বর্মন সুন্দরী। একই সঙ্গে কাজ করার সুবাদে দু’জনের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। তিনি যা আয় করতেন তার বেশিরভাগ অংশই জয়া বর্মন সুন্দরীকে দিতেন।স্বামীর অনুপস্থিতিতে জয়া বর্মন সুন্দরীর বাসাতেও রাত্রিযাপন করতেন।তবে ছয় মাস ধরে তরিকুল স্বামীকে ছেড়ে তাকে বিয়ে করার জন্য জয়াকে চাপ দেন। কিন্তু সম্পর্ক চালিয়ে যেতে রাজি হলেও বিয়ে করতে রাজি হননি জয়া। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
তিনি আরও জানান, ঘটনার ১০দিন আগে তরিকুল তার মোবাইল বন্ধ করে দেন। ঘটনার দিন তিনি শহরের মহাজারার মোড়ে কামারের দোকান থেকে ২০০টাকায় একটি দা কেনেন। সন্ধ্যায় সেই দা দিয়ে কালুর মোড়ে বিসমিল্লাহ হোটেলের সামনে জয়াকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যান। পরে গুরুত্বর আহত অবস্থায় জয়াকে উদ্ধার করে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানের অপারেশন থিয়েটারে তিনি মারা যান। এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে জয়ার স্বামী সপাল রায় বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। উক্ত মামলায় মো. তরিকুল ইসলাম চান্দুকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এই ঘটনায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কনফারেন্স রুমে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল শেখ মো. জিন্নাহ আল মামুন, কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ হোসেন।
এদিকে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অবৈধ সম্পর্কের জেরেই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। আসামিকে কোর্টে চালান দিয়ে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।